Homeখবররাজ্যফের রাত দখল, রাতভর চলছে গান-পথনাটিকা-আঁকা, কোথাও বা শুধুই অবস্থান

ফের রাত দখল, রাতভর চলছে গান-পথনাটিকা-আঁকা, কোথাও বা শুধুই অবস্থান

প্রকাশিত

খবর অনলাইন ডেস্ক: ১৪ আগস্টের পর ৮ আগস্ট। আবার রাত দখলের ডাক। এই ডাকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পথে নেমেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। কোথাও চলছে গান, কোথাও বাজছে বাজনা, আবার কোথাও হচ্ছে পথনাটিকা। রাস্তা জুড়ে আঁকা হচ্ছে ছবিও। কথাওম শুধু রাস্তা জুড়ে প্রতিবাদ। এভাবেই রাত দখলে সাড়া দিয়েছে সাধারণ মানুষ।  

সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা সংক্রান্ত মামলার শুনানি। তারই প্রেক্ষিতে কলকাতা-সহ সারা রাজ্য জুড়ে ‘রাত দখল’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হন বহু মানুষ।

যাদবপুর থেকে সোদপুর, বেহালা থেকে সল্ট লেক, শ্যামবাজার থেকে সিঁথির মোড় – রাত ১১টার পর থেকে নতুন করে জমায়েত শুরু হয় সর্বত্র।

শিলিগুড়িতে মানবন্ধন। ছবি: এএনআই।

তার আগে রবিবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল, ধর্না, অবস্থান চলে। সাধারণ মানুষ থেকে তারকারা, এমনকি কলকাতা শহরে হাতে টানা রিকশাওয়ালারাও পা মেলান প্রতিবাদে। রবিবার সারা দিন জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হয়। মেদিনীপুরের রাস্তায় নেমে পড়েন প্রতিবাদীরা। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের এবং সন্দীপ ঘোষের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। নৈহাটিতে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল বের হয়। শিলিগুড়িতে মানববন্ধন তৈরি করেন সাধারণ মানুষ।   

যাদবপুরে আর্টিস্ট ফোরামের উদ্যোগে এক কর্মসূচি নেওয়া হয়। সেই কর্মসূচির নাম ‘রাজপথই ক্যানভাস’। সেখানে নানা রঙে রঙিন হয়ে ওঠে রাস্তা। সেখানে শুধু ছবি আঁকাই নয়, লেখা হয় নানান স্লোগান। শুধু চিত্রকররাই নন, সাধারণ মানুষরাও রঙ-তুলি হাতে নেমে পড়েন রাস্তায়। আঁকার পাশাপাশি চলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। 

কমলা গার্লস প্রাক্তনীদের প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: রাজীব বসু।

বিকেলে ধর্মতলায় জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দেন নির্যাতিতার বাবা-মা। রাতে তাঁরা পৌঁছে যান যাদবপুরে। সেখানে চিত্রকরদের প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেন তাঁরা। রবিবার রাত ৯টা থেকে গড়িয়া মোড়, গাঙ্গুলিবাগান মোড়, বাঘাযতীন মোড়, সুকান্ত সেতু এবং ৪৫ বাইপাস কানেক্টরে লিখে এবং এঁকে প্রতিবাদ জানান শিল্পীরা। শামিল হন সাধারণ মানুষও।

সোদপুর থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ কিলোমিটার পথ জুড়ে হাত হাত ধরে দাঁড়িয়ে পড়েন মানুষ। তৈরি হয় মানবশৃঙ্খল।

মিছিলে শামিল হাতে টানা রিকশাওয়ালারাও। ছবি: রাজীব বসু।

কলকাতায় এদিন হাতে টানা রিকশাওয়ালারাও আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিলে শামিল হন। এঁদেরই একজন অরবিন্দ যাদব। তিনি বলেন, “আরজি কর কলেজে যে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা ঘটেছে আমরা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের সকলেরই মা-বোন আছে। তার ওপর আমরা দরিদ্র। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই। তাই আমরা আজ পথে নেমেছি।”

কুমোরটুলির শিল্পীদের প্রতিবাদে শিল্পী সনাতন দিন্ডা। ছবি: রাজীব বসু।

কুমোরটুলির শিল্পীরাও আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে শামিল হন। তাঁরা এই কাণ্ডের নানা প্রতীকী ছবি আঁকেন, ভাস্কর্য তৈরি করেন। নিজেদের আঁকা ছবি, নিজেদের তৈরি ভাস্কর্য নিয়ে এদিন মিছিলও করেন। প্রতিবাদের পুরোভাগে ছিলেন শিল্পী সনাতন দিন্ডা। মিছিলকারীদের হাতে নানা শিল্পকর্ম ছাড়াও ছিল পোস্টার। তাতে লেখা – ‘কুমারটুলি দিচ্ছে হাঁক/ আমার দুর্গা বিচার পাক’।

টলিউডের শিল্পীদের মিছিল। ছবি: রাজীব বসু।

টলিপাড়ার শিল্পী ও কলাকুশলীরাও রবিবার পথে নামেন। টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। এ দিনের মিছিলে শামিল হন মানসী সিংহ, অপরাজিতা আঢ্য, সোহাগ সেন, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাদশা মৈত্রেরা। বাঙ্গুর হাসপাতালের সামনে গিয়ে কিছুক্ষণ থমকে যায় মিছিল। শিল্পীরা স্লোগান না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিছুক্ষণ পর মিছিল এগিয়ে চলে হাজরা পার্কের দিকে।

যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের প্রাক্তনীদের প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: রাজীব বসু।

এদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনীরাও আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল বের করেন। কমলা গার্লস স্কুল, যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুল, যাদবপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা মিছিল বের করেন।

উত্তর কলকাতায় মিছিলে শামিল কলকাতার দুই প্রধানের সমর্থকেরা। ছবি: রাজীব বসু।

রবিবার সন্ধ্যায় উত্তর কলকাতায় হয় মহামিছিল। এই মিছিলে শামিল হন বিভিন্ন স্কুলের প্রাক্তনীরা, বিজ্ঞানকর্মীরা, রাজ্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা এবং ময়দানের দুই প্রধানের সদস্য ও সমর্থকরা। সন্ধ্যা ৬টায় মিছিল শুরু হল উত্তর কলকাতায় স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ির সামনে থেকে এবং শেষ হয় শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে। মিছিলকারীদের কারও কারও হাতে ছিল মশাল।

আরও পড়ুন

অপরাজিতা বিলের সমালোচনায় সরব সমাজকর্মী ও আইনজীবীরা, মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি

‘…দুর্নীতিগ্রস্তদের পেশিশক্তির আস্ফালন’! মমতাকে চিঠি লিখে সাংসদপদ ও রাজনীতি ছাড়লেন জহর সরকার

আপনার প্রশ্ন, আমাদের উত্তর

সাম্প্রতিকতম

এশিয়া কাপ: অভিষেক-শুভমনের দুর্দান্ত ব্যাটিং, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আবার জয় পেল ভারত

পাকিস্তান: ১৭১-৫ (সাহিবজাদা ফারহান ৫৮, সইম আয়ুব ২১, শিবম দুবে ২-৩৩) ভারত: ১৭৪-৪ (অভিষেক শর্মা...

৮৩তম বছরে হাজরা পার্ক দুর্গোৎসবের নিবেদন ‘দৃষ্টিকোণ’

৮৩তম বছরে হাজরা পার্ক দুর্গোৎসবের থিম ‘দৃষ্টিকোণ’। শিল্পী বিমান সাহার সৃজনে রঙের বহুমাত্রিকতা ও দেবীর রঙিন রূপে সাজবে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী এই পুজো।

থিম ভাবনা ‘চা-পান উতোর’, আশ্চর্য পানীয় চা-কে ঘিরে আবেগের কথা উঠে আসবে আলিপুর সর্বজনীনের মণ্ডপে

আলিপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসবের ৮০তম বছরে থিম ‘চা-পান উতোর’। শিল্পী অনির্বাণ দাসের সৃজনে মণ্ডপে ফুটে উঠবে দার্জিলিং-অসমের চা-বাগান, শ্রমিক জীবনের কাহিনি ও বিশ্বজোড়া চায়ের ইতিহাস।

জিএসটি সংস্কারকে ‘সাশ্রয়ের উৎসব’ বললেন মোদী, নবরাত্রির প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ

নবরাত্রির প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জিএসটি সংস্কারকে ‘বচত উৎসব’ আখ্যা দিয়ে বললেন, এই পদক্ষেপ দেশকে আত্মনির্ভর ভারতের পথে আরও এগিয়ে নেবে।

আরও পড়ুন

হেরিটেজ স্বীকৃতির পথে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো, গবেষণায় নতুন আশা

হেরিটেজ স্বীকৃতি পেতে পারে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় উঠে আসছে এই ঐতিহ্যের বিশেষ তাৎপর্য।

‘দেবীপক্ষ শুরু হয়নি, উৎসবের সূচনা করলাম’ পুজো উদ্বোধন বিতর্কে অবস্থান স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

দেবীপক্ষের আগে পুজো উদ্বোধন নিয়ে বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, তিনি আসলে উৎসবের সূচনা করেছেন। এ বছর প্রায় তিন হাজার পুজোর উদ্বোধন করবেন বলে জানালেন তিনি।

রাজ্যে বেড়ে গেল জমি-বাড়ির সার্কল রেট, রেজিস্ট্রেশনের খরচ বাড়বে ১২ থেকে ৫০ শতাংশ

২০১৯ সালের পর ফের বাড়ল জমি-বাড়ির সার্কল রেট। এবার ১২ থেকে ৫০ শতাংশ হারে রেজিস্ট্রেশনের খরচ বাড়বে। শহর ও শহরতলিতে বৃদ্ধির হার সর্বাধিক।