Home রাজ্য উঃ ২৪ পরগনা এগরা থেকে দত্তপুকুর বিস্ফোরণ, বাজি ক্লাস্টারেই কি মিটবে সমস্যা?

এগরা থেকে দত্তপুকুর বিস্ফোরণ, বাজি ক্লাস্টারেই কি মিটবে সমস্যা?

0
Duttapukur Blast

পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বাজি কারখানা বিস্ফোরণের পর খাদিকূল গ্রামে গিয়ে বাজি ক্লাস্টার তৈরির ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর কেটেছে বেশ কয়েকমাস। ফের দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর ক্লাস্টার তৈরির প্রসঙ্গে উঠছে।

এগার পর এই কয়েক মাস শুধু জমি চিহ্নিত করা গিয়েছে। তবে সেখানে হবে কি না তাও এখনও চূড়ান্ত নয়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রীও। সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা থেকে ফের সবুজ বাজি তৈরির পক্ষে সওয়াল করেন।

সোমবার ছিল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক। সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়েন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এগরায় বিস্ফোরণের পর মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করে ছ’দফা নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু তার চারমাসের মধ্যেই ফের এই বিস্ফোরণে ক্ষুব্ধ মমতা।

কোথায় ক্লাস্টারের জন্য জমি চিহ্নিত হয়েছে?

প্রাথমিক ভাবে, ক্লাস্টার তৈরির জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে দুটো জায়গাকে চিহ্নিত করা হয়। একটি হল মহিষাদলের কেশবপুর-জালপাইতে। অন্যটি, কোলাঘাটের রূপনারায়ণের তীরবর্তী এলাকায়। কিন্তু জমি চিহ্নিত করা হলেও এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি ঠিক কোথায় ক্লাস্টারটি হবে।

বন্ধ বেআইনি বাজি কারখানায় ফের উৎপাদন

এক বার বন্ধ করে দেওয়া বেআইনি বাজি কারখানায় যাতে আবার উৎপাদন শুরু না হয় তা দেখতে স্থানীয় থানাকে নির্দেশ দেয় নবান্ন। এগরায় মূল অভিযুক্ত ভানু তিনি অতীতেও বাজি কারখানা চালাতেন। পুলিশ গ্রেফতার করলেও মুক্তি পেয়েই আবার তিনি বাজির কারবার শুরু করে দেন।

দত্তপুকুরের ঘটনাতেও দেখা যায় কারখানার মালিক কেরামত আলি অতীতে গ্রেফতার হলেও মুক্তি পাওয়ার পরে আবার বাজি তৈরি শুরু করেন। গত ১৮ মে জেলায় জেলায় নবান্নের তরফে নির্দেশ পাঠানো হলেও কাজের কাজ যে বিশেষ হয়নি। তা দত্তপুকুরের ঘটনাতেই স্পষ্ট।

পড়ুন: পঞ্চায়েত মামলার নিষ্পত্তিতে সব সিসিটিভি ফুটেজ দেখবেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা

বাজি কারখানা না বোমার গবেষণাগার?

এবিপি আনন্দের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দত্তপুকুরের মোচপোলে যেখানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয় তার থেকে মাত্র ৬৫০ মিটার দূরে বেরো নারায়ণপুরে রয়েছে একটি পরিত্য়ক্ত ইটভাটা। রাস্তার উপরেই প্রায় ১০ বিঘা জমি জুড়ে এই ইট ভাটাটি। এই ভাটার ভেতর পাওয়া গিয়েছে অত্য়াধুনিক মেশিন, প্রচুর পরিমানে সলিড ও লিক্য়ুইড রাসায়নিক। ইটভাটার আড়ালে গবেষণাগার। এতে রয়েছে টেস্টটিউব, কনিক্যাল ফ্লাস্ক, গ্লাভস, হেলমেট। কী হতো এই ইটভাটা তা নিয়ে পরতে পরতে রহস্য।

সেইপরিত্য়ক্ত ইটভাটা

লকডাউন থেকেই রমরমা

দত্তপুকুররের এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন লকডাউন-পর্বেই বেআইনি বাজি কারখানার রমরমা। সে সময় অনেকের বাড়িতে হাঁড়ি চড়ছিল না। দিনে দু’তিনশো টাকাও তখন অনেক পরিবারের কাছে অনেক। গ্রামবাসীরা অনেকে জানিয়েছেন আজিবর রহমান, কেরামত আলিরা টোপ দেন সে সময় টোপ দেন, এক হাজার বাজিতে আঠা ও প্লাস্টিকের মোড়ক লাগালে মিলবে ১১০ টাকা।

বাড়ির সকলে মিলে এই কাজে সাহায্য করতে পারে। কারবারিরাই বাজি দিয়ে যেতে এবং বাড়ি থেকে নিয়ে যেত। তাই সহজে আয়ের এই রাস্তা ধরেন অনেকেই। রাতারাতি ফুলেফেঁপে ওঠে বাজির কারবার। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত এক মহিলা জানিয়েছেন, ‘কাজটা বিপজ্জনক জেনেও সে সময়ে টাকার জন্য হাত লাগিয়েছিলাম।’ বাজি ক্লাস্টারেই কি সমস্যার সমাধান হবে? প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version