প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। শনিবার থেকে টানা বৃষ্টিতে দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক ও সুখিয়াপোখরি-সহ পাহাড়জুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোথাও সেতু ভেঙে পড়েছে, কোথাও ধসে চাপা পড়েছে ঘরবাড়ি ও রাস্তা। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত বা গৃহহীন হয়েছেন।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মিরিক ও সুখিয়াপোখরিতে। পাহাড়ের এই দুই অঞ্চলে একাধিক রাস্তা ও সেতু ধসে বন্ধ হয়ে যায়, যা পর্যটন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় প্রভাব ফেলেছে।
তবে সোমবার সকাল থেকে চিত্রটা অনেকটাই বদলেছে। পাহাড়ে আর নতুন করে বৃষ্টি হয়নি, বরং সকালে দেখা মিলেছে রোদ্দুরের। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গে আপাতত নতুন করে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। ধীরে ধীরে থামছে পাহাড়ের দুর্যোগ, এবং পরিস্থিতি ফিরছে নিয়ন্ত্রণে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বর্তমানে উত্তর-পূর্ব বিহার ও উত্তর-পূর্ব অসমে দুটি ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় রয়েছে। পাশাপাশি, উত্তর-পশ্চিম ভারতে একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা দেখা দিচ্ছে। এর প্রভাবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি নতুন ঝঞ্ঝা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে পারে, যদিও তার ফলে বড় কোনও দুর্যোগের আশঙ্কা নেই।
সামগ্রিকভাবে এখন দেশজুড়ে বৃষ্টি কমছে। বর্ষা বিদায়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, সপ্তাহান্তে পশ্চিমবঙ্গেও বর্ষা বিদায়ের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হতে পারে।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গে এখনও কিছুটা বিক্ষিপ্ত ঝড়বৃষ্টি চলতে পারে। মঙ্গলবার ও বুধবার কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও নদিয়ায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
তবে বৃহস্পতিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গেও বৃষ্টির সম্ভাবনা কমবে। সপ্তাহান্তে আকাশ থাকবে প্রধানত পরিষ্কার। আবহাওয়াবিদদের মতে, এ সপ্তাহের শেষ থেকেই শুরু হতে পারে বর্ষা বিদায় পর্ব।
ধস ও দুর্যোগের ক্ষত এখনও শুকোয়নি, কিন্তু উত্তরবঙ্গে ধীরে ধীরে ফিরছে স্বস্তি। পাহাড়ে বৃষ্টি থেমেছে, আকাশে রোদ্দুর। আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস বলছে—এ বার বিদায় নিচ্ছে বর্ষা, ফিরছে শরতের রোদ।