ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন থেকেই পশ্চিম বর্ধমানের মাইথনের জঙ্গলে বনভোজনের ক্ষেত্রে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করল বন দফতর। যত্রতত্র উনুন জ্বালানো, উচ্চৈস্বরে গানবাজনা, পটকা ফাটানো এবং মদ্যপানের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া গভীর জঙ্গলে প্রবেশে অনুমতি নেই।
সালানপুর ব্লক প্রশাসন এবং বন দফতর মিলে মাইথনের কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করেছে, যেখানে পিকনিক করা যাবে। থার্ড ড্রাইক, মিলেনিয়াম পার্ক, এবং রাইফেল শুটিং রেঞ্জের মতো জায়গাগুলি পিকনিকের জন্য নির্ধারিত। প্লাস্টিক বা থার্মোকলের ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
বন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “বন্যপ্রাণ এবং পরিবেশ রক্ষার জন্যই এই ব্যবস্থা। জঙ্গলে আগুন জ্বালানো বা শব্দদূষণ করলে জরিমানা করা হবে।’’
মাইথনের জলাধারের আশপাশে এবং জঙ্গলের প্রবেশপথে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশের পাশাপাশি সিভিল ডিফেন্সের টিম রাখা হয়েছে। বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্ত এলাকায় বাড়ানো হয়েছে পুলিশের কড়াকড়ি।
জলে বা জঙ্গলে কেউ বিপদে পড়লে দ্রুত উদ্ধারের জন্য সিভিল ডিফেন্স প্রস্তুত থাকবে। পুলিশের এক প্রতিনিধি বলেন, “২৫ ডিসেম্বর এবং নববর্ষের মতো দিনগুলিতে প্রচুর ভিড় হয়। পর্যটকদের সুরক্ষার জন্য এই তৎপরতা।”
মাইথনে ভ্রমণের জনপ্রিয়তার কারণে প্রতিদিনই আসানসোল, বাঁকুড়া, হুগলি, এবং পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড থেকে বহু পর্যটক আসেন। কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে পুজো দেওয়া, নৌকাবিহার, এবং নির্জন দ্বীপের মনোরম পরিবেশ উপভোগ করতে তাঁরা ভিড় করেন। তবে এবার থেকে পর্যটকদের বন দফতরের নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
বন দফতরের এই নতুন পদক্ষেপে পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণ রক্ষার পাশাপাশি পর্যটকদের সুরক্ষাও নিশ্চিত করা হচ্ছে। তবে কড়া নিয়মাবলী এবং জরিমানার আশঙ্কা অনেককেই চিন্তিত করেছে।