আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুন মামলায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করল শিয়ালদহ আদালত। শনিবার বিচারক অনির্বাণ দাস ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু), এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেন। আগামী সোমবার দুপুর ১২টায় দোষীর শাস্তি ঘোষণা করা হবে।
গত বছরের ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হল থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ ওঠে, তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। তদন্তে নেমে সিবিআই একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে সঞ্জয় রায়কে চিহ্নিত করে এবং চার্জশিট পেশ করে।
মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয় গত বছরের ১১ নভেম্বর, ঘটনার ৫৯ দিনের মাথায়। ১৬২ দিনের বিচারপর্ব শেষে আদালত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে। বিচারক অনির্বাণ দাস জানিয়েছেন, সমস্ত প্রমাণ এবং সাক্ষ্য বিবেচনা করেই রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
বিচারক অনির্বাণ দাস সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে উদ্দেশ করে বলেন, ‘‘সিবিআই এবং সাক্ষীদের বয়ানের ভিত্তিতে প্রমাণ হয়েছে যে আপনি দোষী। এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড।’’ এ কথা শুনে সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমি নির্দোষ। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। আমার কথা অন্তত একবার শুনুন।’’
বিচারক এরপর বলেন, ‘‘সোমবার আপনার বক্তব্য শোনা হবে।’’
রায় ঘোষণার পর নির্যাতিতার বাবা আদালতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। চোখ ভিজে যায় তাঁর। তিনি বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনার উপর যে বিশ্বাস ছিল, আপনি তা পুরোপুরি বজায় রেখেছেন।’’ বিচারক শান্তভাবে উত্তর দেন, ‘‘সোমবার আবার আসুন।’’
গত বছরের ৯ অগস্ট রাতে, ডিউটি চলাকালীন ওই চিকিৎসক নিখোঁজ হন। পরে হাসপাতালের সেমিনার হলে তাঁর নিথর দেহ পাওয়া যায়। ফরেনসিক রিপোর্টে ধর্ষণ এবং শ্বাসরোধ করে খুনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। তদন্তে উঠে আসে, ঘটনাস্থলে সঞ্জয়ের উপস্থিতি এবং তার ভূমিকার প্রমাণ।
প্রাথমিক তদন্তে স্থানীয় পুলিশের কাছ থেকে মামলা সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। সিবিআই-এর পেশ করা চার্জশিটে উঠে আসে সঞ্জয় রায় পরিকল্পিতভাবে এই অপরাধ ঘটিয়েছে।
সোমবার শাস্তি ঘোষণার সময় আদালতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা।