Homeরাজ্যশিলিগুড়িপাহাড়ে ঘন ঘন ভূমিধস: নেপথ্যে কি উন্নয়নের চাপ ও নিয়ন্ত্রণহীন পর্যটন! কী...

পাহাড়ে ঘন ঘন ভূমিধস: নেপথ্যে কি উন্নয়নের চাপ ও নিয়ন্ত্রণহীন পর্যটন! কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

দার্জিলিং ও কালিম্পঙে লাগাতার ধস ও বন্যার কারণ হিসেবে উঠে এল বেপরোয়া নির্মাণ, পাহাড় কেটে রাস্তা ও হোটেল তৈরি, এবং নিয়ন্ত্রণহীন পর্যটন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই পদক্ষেপ না নিলে পাহাড়ের ক্ষতি হবে স্থায়ী।

প্রকাশিত

দার্জিলিং ও কালিম্পঙের পাহাড়ি সৌন্দর্য আজ ভয়াবহ বিপদের মুখে। টানা বৃষ্টিতে ধস ও বন্যায় ২০ জনেরও বেশি প্রাণহানির পর বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন — পাহাড় কেটে ‘উন্নয়ন’ নামে যে কংক্রিটের দানব তৈরি হয়েছে, তা একদিনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়, তবে এখনই সংশোধনের উদ্যোগ নিতে হবে।

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক তানভির আরশেদ বলেন, “এই বিপর্যয়ের মূল তিনটি কারণ —
১️. ছোট শহর ও অফরুট এলাকায় পর্যটনের হঠাৎ বৃদ্ধি,
২️.  বড়সড় উন্নয়ন প্রকল্প যেমন সেভক-রংপো রেললাইন বা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, যার ফলে প্রতি বছর তিস্তার জলস্তর অস্বাভাবিক বেড়ে যায়,
৩️. এবং অবৈধ নদীখাত খনন।”

৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সিভোক-রংপো রেললাইন তৈরি করতে পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গ বানানো হচ্ছে। পাশাপাশি চার ও ছয় লেনের সড়ক নির্মাণ, আর তিস্তা, রংগিত, বালাসন ও জলঢাকা নদীর জল বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বারবার বাঁধ দেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সাব-হিমালয়ান অঞ্চল প্রকৃতিগতভাবে ভঙ্গুর। কিন্তু নতুন ধরনের পর্যটনের চাপে — হোমস্টে, রিসর্ট বা বিলাসবহুল হোটেল গড়ে ওঠায় পাহাড়ের ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে ঘনঘন ধস ও জলের স্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, “ধস মানে হল পাহাড়ের ভূমি নীচে নেমে যাওয়া, যখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ধরে রাখার ক্ষমতাকে ছাপিয়ে যায়। গাছই আসলে সেই ‘গ্লু’ যা পাহাড়কে ধরে রাখে। কিন্তু যখন নির্বিচারে বনভূমি কেটে রাস্তা বা হোটেল তৈরি হয়, তখন সেই গ্লু আর থাকে না — ফলেই ধস।”

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রাক্তন প্রধান সুবীর সরকার স্পষ্টই বলেছেন, “অবাধ নির্মাণই বারবার ধসের কারণ হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: শেষ লগ্নে বর্ষা! উত্তরবঙ্গে মিলল রোদের দেখা, দক্ষিণে কমেছে বৃষ্টি, কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?

অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ইকো-ট্যুরিজম চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, “এখন পাহাড়ি মানুষের চিন্তাধারাই বদলে গেছে। তারা আর ঐতিহ্যবাহী কাঠের বাড়িতে থাকতে চান না, বরং মার্বেল টাইলসের কংক্রিটের বাড়ি তৈরি করছেন — কারণ একধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে যে এগুলি সহজে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়। এই মানসিক পরিবর্তনই পাহাড়ের স্থাপত্য এবং পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট করছে।”

বিশেষজ্ঞদের একবাক্যে মত — এখনই যদি পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ ও পর্যটন নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তবে দার্জিলিং ও কালিম্পঙের পাহাড় চিরতরে হারাবে নিজের অস্তিত্ব।

আপনার প্রশ্ন, আমাদের উত্তর

সাম্প্রতিকতম

শহুরে জীবন, কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ, ‘কুল ইমেজ’ দেখানোর মোহে ধুূমপান বাড়ছে তরুণী ও মহিলাদের মধ্যে, জানাচ্ছে সমীক্ষা

দক্ষিণবঙ্গে শুক্রবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা। উইকেন্ডে আবহাওয়ার পরিবর্তন, কমবে আর্দ্রতা ও বৃষ্টির সম্ভাবনা। উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির কোনও সতর্কতা নেই, বর্ষা বিদায়ের পথে বাংলা।

নেদারল্যান্ডসের সহায়তায় রাজ্যে ২ বিশেষ ফুলচাষ কেন্দ্র! নদিয়া ও দার্জিলিংয়ে গড়ে উঠছে ফ্লোরিকালচার সেন্টার ফর এক্সেলেন্স

রাজ্যের ফুলচাষে নতুন দিগন্ত! নেদারল্যান্ডসের সহায়তায় নদিয়ার আয়েশপুর ও দার্জিলিংয়ের মংপুতে গড়ে উঠছে ২টি ফ্লোরিকালচার সেন্টার ফর এক্সেলেন্স। আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ পাবেন রাজ্যের ফুলচাষীরা।

দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবি করেই কাজ হারালেন দীপিকা? দেশের ফিল্‌ম ইন্ডাস্ট্রির কী মুখোশ খুললেন?

খবর অনলাইন ডেস্ক: অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন দীপিকা পাড়ুকোন। কেন সন্দীপ রেড্ডী বাঙ্গার ‘স্পিরিট’ এবং...

বিশ্বকাপ মহিলা ক্রিকেট ২০২৫: বাংলার রিচার দুরন্ত লড়াই ব্যর্থ, প্রোটিয়াদের জয় এল ক্লার্কের ব্যাট থেকে

ভারত: ২৫১ (৪৯.৫ ওভার) (রিচা ঘোষ ৯৪, প্রতীকা রাওয়াল ৩৭, ক্লোয়ে ট্রায়ন ৩-৩২, মেরিজেন...

আরও পড়ুন

উত্তরবঙ্গে বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে একাধিক ট্রেন বাতিল, পর্যটকদের জন্য বিশেষ বাস পরিষেবা

উত্তরবঙ্গে প্রবল বর্ষণ ও বন্যার জেরে আলিপুরদুয়ার ডিভিশনে একাধিক ট্রেন বাতিল, ঘুরপথে চালানো ও সংক্ষিপ্ত রুটে থামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল।

উত্তরবঙ্গে প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কা, জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ারে লাল সতর্কতা, দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি

বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ স্থলভাগে প্রবেশ করেছে। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে লাল সতর্কতা, দার্জিলিং-সহ একাধিক জেলায় কমলা সতর্কতা। দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল হাওয়া অফিস।

পুজোর মুখে ফের চালু শিলিগুড়ি-সিকিম হেলিকপ্টার পরিষেবা, মাত্র আধ ঘণ্টায় গ্যাংটক

পুজোর মুখে ফের চালু হল শিলিগুড়ি-সিকিম হেলিকপ্টার পরিষেবা। মাত্র আধ ঘণ্টায় গ্যাংটক পৌঁছনো যাবে। মাথাপিছু খরচ সাড়ে ৪ হাজার টাকা। পর্যটন দপ্তরের আশা, এতে সিকিম ভ্রমণে আগ্রহ বাড়বে।