রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় বড়সড় রূপান্তরের পথে হাঁটছে স্বাস্থ্যদপ্তর। এবার গোটা রাজ্যজুড়ে চালু হতে চলেছে ‘স্মার্ট ওপিডি’ বা স্মার্ট আউটডোর পরিষেবা। সরকারি পরিভাষায় একে বলা হচ্ছে এমন এক পরিষেবা, যার মূল লক্ষ্য হল সাধারণ রোগীদের হাসপাতালের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর করা।
বর্তমানে সরকারি হাসপাতালগুলির আউটডোরে চিকিৎসা করাতে এসে রোগীদের পড়তে হয় নানান জটিলতায়। একদিকে চিকিৎসকের ঘর, তো অন্যদিকে রোগ বা রক্ত পরীক্ষার জায়গা—সেখানে থেকে ওষুধ সংগ্রহের জন্য ছুটতে হয় অন্য তলায় বা অন্য ভবনে। এই ছুটোছুটির ক্লান্তি এবং সময়ের অপচয় দূর করতেই এবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ‘স্মার্ট ওপিডি’ গঠনের।
স্মার্ট ওপিডি-তে থাকছে—একই ছাদের তলায় একাধিক ঘরে চিকিৎসকের পরামর্শ, রোগ ও রক্ত পরীক্ষা এবং সরকারি ফার্মাসি থেকে ওষুধ সংগ্রহের সুযোগ। এতে রোগী ও তাঁর পরিজনদের সময়, শ্রম এবং হয়রানি—সবটাই কমবে বলে দাবি স্বাস্থ্যদপ্তরের।
প্রাথমিক পর্যায়ে রাজ্যের দ্বিতীয় স্তরের সরকারি হাসপাতালগুলিকে স্মার্ট ওপিডিতে রূপান্তর করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে ১৪টি জেলা হাসপাতাল, ৩৪টি মহকুমা হাসপাতাল এবং ২৭টি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল।
উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া এবং নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ইতিমধ্যেই স্মার্ট আউটডোর তৈরির পথে অনেকটাই এগিয়ে। সাংসদ পার্থ ভৌমিকের তহবিল থেকে প্রতিটি হাসপাতালে ২ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। পরিকাঠামো তৈরির জন্য স্বাস্থ্যদপ্তরও বরাদ্দ করবে অতিরিক্ত অর্থ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সমুদ্র সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, “আশা করছি, এই বছরের শেষের দিকে স্মার্ট ওপিডি চালু হয়ে যাবে।”
এখানেই শেষ নয়। শহরের স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনেও ম্যালেরিয়া ক্লিনিককে স্মার্ট ক্লিনিকে রূপান্তরিত করার কাজ শুরু হয়েছে। রক্ত সংগ্রহ, রিপোর্ট এবং ওষুধ—সবই মিলবে একই দিনের মধ্যে, একই ভবনে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলেই মত স্বাস্থ্য কর্তাদের।