উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: রাত পোহালেই বাংলা নববর্ষের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেবে আপামর বাঙালি। আসছে আরও একটা নতুন বছর। আর এই নতুন বছরের আগে, চৈত্র মাসের শেষ দিন আজও গাজন গানের মধ্য দিয়ে মেতে ওঠে গ্রাম বাংলা।
তবে সে ভাবে আর আগের মতো গ্রামে গাজন উৎসব দেখা যায় না। রাজ্যের অন্য জেলাগুলির মতোই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু এলাকায় আজও সেই রীতিতে চৈত্রের শেষে গাজন উৎসবের দেখা মেলে। বাংলার লোকসংস্কৃতির মধ্যে গাজন উৎসব অন্যতম। তবে বর্তমানে আধুনিকতার যুগে সেই পুরানো প্রাচীন সংস্কৃতি এখন অবলুপ্তের পথে।
এই গাজন উৎসব চৈত্রের শেষে বৈশাখের আগে গ্রামবাংলায় শুরু হয় গাজন গান। নানান নাচ গানে জমিয়ে দেন শিল্পীরা বিভিন্ন সাজ পোশাকের মাধ্যমে মেতে ওঠেন শিল্পীরা। চৈত্র সংক্রান্তির গাজন মূলত শিব ঠাকুরকে ঘিরেই, তাই চলতি ভাষায় গ্রাম বাংলার মানুষরা একে চৈতে গাজন বলে অভিহিত করেছে। বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এই কটা দিন অন্য কাজ ভুলে এই কাজেই লিপ্ত হয়। চৈত্রের শুরু থেকেই চলে এর প্রস্তুতি। সাধারণত শিবকে নিয়েই বানানো হয় নানান ধরনের গান। নানান সাজে সেই গান পরিবেশন করেই মানুষের মধ্যে আনন্দ দিয়ে থাকে তাঁরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর ও বকুলতলা থানা এলাকার ময়দা,জয়নগর, দক্ষিন বারাশত, বহড়ু, রাজাপুর, বামুনগাছি, ফুটিগোদা, নিমপীঠ, শাহজাদাপুর, বাইশহাটা-সহ বহু এলাকায় চৈএের শেষ চারদিন ধরে চলে এই ধরনের গাজন গান।চড়কের দিন এই গাজন গান শেষ হয়। তবে দিনে দিনে সংখ্যাটা অনেক কমে আসছে গ্রামের পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক মানুষরাই মূলত গাজন গানকে কেন্দ্র করে শিবকে উপাসনা করেন।
প্রাচীন ধ্যান ধারণা অনুযায়ী, শিবকে সন্তুষ্ট করতে শিবকে নিয়েই গান লেখা হয় আর তা ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন এলাকায় শিবের মহিমা হিসাবে প্রচার করা হয় গাজন গানের মধ্যে দিয়ে।