কুলতলি: দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাঘ আতঙ্কের মধ্যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটল। সোমবার সকালে বাঘ ধরতে গিয়ে এক বনকর্মী রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের আক্রমণের শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?
রবিবার রাত থেকেই কুলতলির নগেনাবাদ ৯ নম্বর মুলার জেটিঘাট এলাকায় বাঘের উপস্থিতি টের পান স্থানীয়রা। আতঙ্ক ছড়ালে বন দফতরের রায়দিঘি রেঞ্জের অন্তর্গত নলগোড়া বিট অফিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছন। গ্রামে যাতে বাঘ না ঢুকতে পারে, তার জন্য নাইলনের জাল লাগানো হয়। তবে সোমবার সকালে জানা যায়, বাঘটিকে ওই জালের আশপাশেই ঘুরতে দেখা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় টাইগার টিমের সদস্যরা বাঘটি ধরার উদ্যোগ নেন। কিন্তু সেই সময়ই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাঘটি আচমকাই বনকর্মী গণেশ শ্যামলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাঁর ঘাড় কামড়ে ধরে। সঙ্গে সঙ্গে দলের অন্যান্য সদস্যরা লাঠি দিয়ে বাঘটিকে আঘাত করেন, যার ফলে গণেশকে ছেড়ে বাঘটি জঙ্গলে ঢুকে পড়ে।
গ্রামের মানুষের আতঙ্ক
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকেলে রাজকুমার সাঁপুই নামে এক যুবক প্রথম বাঘটিকে দেখতে পান। তিনি নগেনাবাদ জেটিঘাটের কাছে বসে থাকার সময় শ্মশানঘাটের কাছে বাঘটিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। বিষয়টি জানাজানি হতেই গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং দল বেঁধে লাঠিসোঁটা নিয়ে এলাকায় খোঁজ শুরু করেন। পরে বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়ার পর বন দফতরকে খবর দেওয়া হয়।
বর্তমান পরিস্থিতি
বনকর্মী গণেশ শ্যামলকে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বন দফতর সূত্রে খবর, তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হলেও স্থিতিশীল। অন্যদিকে, বাঘটিকে আটক করার জন্য বন দফতরের পক্ষ থেকে নতুন করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাঘের উপস্থিতিতে এলাকাজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রশাসন ও বন দফতর স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলেছে এবং বাঘটিকে ধরে নিরাপদ জায়গায় পাঠানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।