কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া ঘিরে মামলার শুনানি সোমবার শেষ হল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের বেঞ্চ শুনানি শেষে রায় ঘোষণা স্থগিত রাখেন।
সোমবার রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল (AG) কিশোর দত্ত, এসএসসি-র পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করেন অনিন্দ্য মিত্র এবং বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
রাজ্যের যুক্তি
এজি কিশোর দত্ত বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট পুরনো নিয়োগ বাতিল করলেও নতুন প্রক্রিয়ার ধরন নির্দিষ্ট করেনি। শুধু বলেছে, শূন্যপদ পূরণ করতে হবে।” তাঁর দাবি, “এসএসসি নতুন বিধি তৈরি করে নিয়োগ শুরু করেছে। কারও আপত্তি থাকলে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে বলুন।”
তিনি আরও বলেন, “এসএসসি কোন প্রার্থীর আবেদন নেবে, সেটি কমিশনের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। যোগ্যতার মান নির্ধারণে সুপ্রিম কোর্ট কোনও বাধ্যবাধকতা দেয়নি। ফলে কমিশন তার সিদ্ধান্তে অটল।”
এসএসসি-র পক্ষে সওয়াল
আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “কমিশনের আইনকে চ্যালেঞ্জ করা যায় না। হাই কোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগের নির্দেশ দিলেও কোন বিধি মেনে তা হবে, বলেনি।”
তাঁর বক্তব্য, “নতুনেরা ৯ বছর ধরে সুযোগ পাননি। যদি যোগ্য হন, তাহলে পরীক্ষায় বসুন।”
তিনি যুক্তি দেন, “৪০ শতাংশ পাওয়া প্রার্থী আর ৭০ শতাংশ পাওয়া প্রার্থীকে সমান গুরুত্ব দেওয়া ঠিক নয়। সেরা প্রার্থীকে বেছে নেওয়াই কমিশনের কাজ।”
বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষ
আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র বলেন, “কমিশনের ভুলেই এই জটিলতা। প্যানেল বাতিল হয়নি, শুধু নিয়োগ বাতিল হয়েছে। নতুনভাবে যোগ্যতামান বদল করা আদালতের নির্দেশের লঙ্ঘন।”
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “এসএসসি ২০১৯ সালের বিধি মেনেও নিয়োগ করেনি। নতুন বিধি তৈরি করে পুরনো বঞ্চিতদের বাদ দেওয়া হচ্ছে, যা বেআইনি।”
কী চেয়েছেন বিচারপতিরা
পূর্ববর্তী শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ SSC-র সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া হলফনামা দেখতে চেয়েছিলেন। আদালত এই হলফনামা খতিয়ে দেখেই রায় দেবেন।
এখন অপেক্ষা রায়ের
শুনানি শেষ হলেও, হাই কোর্ট এখনও রায় ঘোষণা করেনি। SSC-র নিয়োগ সংক্রান্ত ভবিষ্যৎ দিক নির্ধারণ করবে এই রায়।
এদিকে, হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী SSC-র নিয়ম বদলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল, তাঁরা চাইছেন পুরনো পদ্ধতিতেই নিয়োগ হোক এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিচার নিশ্চিত করা হোক।