বিচারপতি সৌমেন সেন ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে নিজেকে মামলার শুনানি থেকে সরিয়ে নেওয়ায় নতুন বেঞ্চে উঠল প্রাথমিকের ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলা। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম মামলাটি বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে পাঠিয়েছেন।
এই মামলার শুনানি এদিনই হওয়ার কথা ছিল বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে’র ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু শুনানির ঠিক আগেই বিচারপতি সেন মামলা থেকে অব্যাহতি নেন। ফলে মামলাটি নিয়ম মেনে প্রধান বিচারপতির কাছে ফেরত যায় এবং নতুন বেঞ্চ নির্ধারণ হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে মাসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেন। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে। পরে একাধিক মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে, যার মধ্যে বিচারপতি অমৃতা সিংহ ৪২ হাজার প্রাথমিক নিয়োগের প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
মামলাকারীদের দাবি, আদালতের নির্দেশে প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়, তাঁদের চেয়ে কম নম্বর পেয়েও একাধিক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছেন। এই অবস্থায় ‘ঢাকিসমেত বিসর্জন’-এর হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
উল্লেখযোগ্যভাবে, অতীতে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের একটি নির্দেশ ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। এক মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সেই নির্দেশ পালটে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং বিচারপতি সেনের বেঞ্চের রায় কার্যকর হবে না বলেও মন্তব্য করেন।
এদিকে, রাজ্যে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকে প্রায় ২৬ হাজার নিয়োগ বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের পর নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে উত্তাপ বেড়েছে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে। এরই মধ্যে প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানির দিকেও তাকিয়ে গোটা রাজ্য।