Home খবর রাজ্য এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি: সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই-এর বড় সওয়াল, হাই কোর্টের রায়ের পক্ষেই...

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি: সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই-এর বড় সওয়াল, হাই কোর্টের রায়ের পক্ষেই কেন্দ্রীয় সংস্থা

0
প্রশ্ন ফাঁসের তদন্তভার হাত নিল সিবিআই

সুপ্রিম কোর্টে সোমবার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে হাই কোর্টের রায়কেই সমর্থন জানাল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়, যেখানে সিবিআই-এর আইনজীবী স্পষ্ট জানান, “নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, সাদা খাতা জমা দিয়েও চাকরি পাওয়া গেছে। হাই কোর্টের রায় যথার্থ এবং তা বহাল থাকা উচিত।”

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না শুনানিতে মূল সমস্যা হিসেবে আসল ওএমআর শিটের অনুপস্থিতির বিষয়টি তোলেন। তিনি প্রশ্ন করেন, “কোন ওএমআর শিটকে আসল বলে ধরা হবে? এসএসসি নাকি পঙ্কজ বনসলের সংস্থার তথ্য বিশ্বাসযোগ্য? প্রকৃত তথ্য জানা এখন প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় আদালত কী করতে পারে?” পাশাপাশি, চারটি বিভাগে কত নিয়োগ হয়েছিল, সে বিষয়েও সিবিআই ও এসএসসির কাছে ব্যাখ্যা চান তিনি।

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আসল ওএমআর শিট না থাকার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। সোমবার শুনানিতে তিনি প্রশ্ন করেন, “যদি আসল ওএমআর শিটই না থাকে, তাহলে কোন তথ্যকে সত্য বলে ধরা হবে?”

এই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই আদালতে জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, “সাদা খাতা জমা দিয়েও চাকরি হয়েছে। হাই কোর্টের রায় যথাযথ, সেটিই বহাল রাখা উচিত।” আদালত জানতে চায়, এসএসসি নাকি পঙ্কজ বনসলের সংস্থার কাছে নিয়োগ সংক্রান্ত আসল তথ্য রয়েছে। তথ্যের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি।

এর আগে, কলকাতা হাই কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ বাতিল করে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি খারিজ করেছিল। হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়, যাঁরা অনৈতিকভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের বেতন সুদ-সহ ফেরত দিতে হবে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আগের শুনানিতে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, “অনেকেই চাকরির আবেদন না করেও নিয়োগ পেয়েছেন। আবেদনকারীদের জন্য নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।”

প্রসঙ্গত, হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। শিক্ষা দফতর, এসএসসি ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদও পৃথকভাবে মামলা করে। পরে চাকরিহারা কয়েকজনও মামলা করেন। তবে ৭ মে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়।

সুপ্রিম কোর্ট জানায়, যদি যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের আলাদা করা সম্ভব হয়, তবে গোটা নিয়োগ বাতিল করা ন্যায্য হবে না। কিন্তু সোমবারের শুনানিতে সিবিআইয়ের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়—এই নিয়োগ দুর্নীতিগ্রস্ত এবং হাই কোর্টের রায়ই সঠিক। এখন দেখার, সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী নেয়।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version