এসএসসি দুর্নীতি মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের জন্য বড় স্বস্তি। অতিরিক্ত শূন্যপদ বা ‘সুপারনিউমেরারি’ পদ তৈরির সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ না করে মঙ্গলবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজ্য সরকার ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পরামর্শ নিয়েছিল এবং রাজ্যপালের সম্মতিও ছিল। সেই প্রেক্ষিতে আদালতের হস্তক্ষেপের কোনও প্রয়োজন নেই।
প্রসঙ্গত, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির আবহে ৬,০০০-এর কাছাকাছি অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করেছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। সেই পদে ‘অযোগ্য’দের নিয়োগের অভিযোগ উঠেছিল। যদিও সেই পদ তৈরির সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত ছিল এবং তা নিয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়।
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল ভিন্ন। তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, বেআইনি নিয়োগের বৈধতা দিতে এই অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়েছে। পরে সেই নির্দেশ গিয়েছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে। তাঁরাও বলেছিলেন, সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আইনসম্মত নয়, এবং প্রয়োজনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে।
এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। শীর্ষ আদালত শুরুতেই হাই কোর্টের সিবিআই তদন্তের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়। অবশেষে মঙ্গলবার সেই মামলার নিষ্পত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, প্রশাসনিক অনুমোদন থাকায় সুপারনিউমেরারি পদ গঠন আদালতের হস্তক্ষেপযোগ্য নয়।
রাজনৈতিক মহলে এই রায় মমতা সরকারের কাছে বড় জয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে বিরোধীদের দাবি, আদালতের পর্যবেক্ষণে যেহেতু ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া’কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, ফলে এই রায় ‘নৈতিকভাবে মুক্তি’ নয়।