কলকাতা: নীতি আয়োগের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাইক বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে সোমবার বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব আনল তৃণমূল কংগ্রেস। এই প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়ে ওয়াক আউট করলেন বিজেপি বিধায়করা এবং বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন। শাসক-বিরোধী স্লোগানে মুখর হয়ে উঠল বিধানসভা।
তৃণমূল বিধায়ক মানস ভুঁইয়া নীতি আয়োগের ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব আনেন। প্রস্তাব শুনেই প্রতিবাদ করেন বিজেপি বিধায়করা। বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটি পূর্বপরিকল্পিত মিথ্যাচার। এই প্রস্তাব আমরা মানি না। পিসি এবং ভাইপো মিলে দিল্লিতে সেটিং করতে গিয়েছিলেন, তা পারেননি বলেই মিথ্যা বলেছেন।”
এরপর বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওরাওঁ বলেন, “এই প্রস্তাব মানছি না, মানব না।” এই মন্তব্যের পর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেন, “এসব কী হচ্ছে? আপনারা আলোচনা শুনুন।” এরপরই বিজেপি বিধায়করা ওয়াক আউট করেন এবং বাইরে গিয়ে শাসক-বিরোধী স্লোগান দেন।
বিজেপি ওয়াক আউট করার পরও তৃণমূলের বিধায়কেরা আলোচনা চালিয়ে যান। ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বাংলার মানুষ বরাবর মমতাকেই চেয়েছেন। নরেন্দ্র মোদীকে সমর্থন করেনি এই রাজ্য। নীতি আয়োগের বৈঠকে মমতাকে বলতে দেওয়া হবে না, সেটাই স্বাভাবিক। সত্যিটা বিজেপি শুনতে চাইছে না, তাই ওয়াক আউট।”
তিনি আরও বলেন, “আসলে কেন্দ্রীয় সরকার চায়, এই দেশ হোক শুধু কর্পোরেট সংস্থাগুলির জন্য। মমতা তার প্রতিবাদ করেছেন। মোদী ‘মন কি বাত’-এ শুধু নিজের মনের কথা বলেন। আরও কারও কথা শুনতে চান না। এভাবে তিনি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কলুষিত করছেন।”
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গত তিন বছরে বিজেপি বেশিরভাগ সময়েই বিধানসভার বাইরে কাটিয়েছে। কোন কথা অধিবেশনে বলতে হবে, কোনটা বলতে হবে না, তা ওরা জানে না।”
মানস ভুঁইয়া বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কোনও অসত্য কথা বলেননি। উনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাই বাংলার কথা বলেছেন। শিখাদেবী নিজের কথা জানিয়ে এখান থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু নীতি আয়োগের চেয়ারম্যান কি এখনও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন? মোদী নিজে কি করেছেন?”
তিনি আরও জানান, “মাইক বন্ধ করে দেওয়ার রেওয়াজ নীতি আয়োগে আগে ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী যা করেছেন, তা মানুষের স্বার্থে। তিনি আগে প্ল্যানিং কমিশনে কথা বলে বাংলার দাবি আদায় করে আনতেন। এখন তা হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকার স্বৈরাচারী। সারা ভারত এর জন্য ছি ছি করছে।”