রাজ্যের সব প্রান্তে চলাচল করা টোটোগুলিকে সরকারি নথিভুক্তির আওতায় আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে রয়েছে রাজ্যের পরিবহণ দফতর, যার লক্ষ্য টোটো চলাচলকে নিয়ন্ত্রণে আনা ও একটি সুশৃঙ্খল পরিবহণ নীতি গড়ে তোলা। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হলে টোটো চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান শুরু হবে।
দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, টোটো নিবন্ধনের কাজ শুরু হয়েছে ১৩ অক্টোবর থেকে এবং তা চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। এর ফলে রাজ্যে মোট কত সংখ্যক টোটো চলছে, তার একটি সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে। এরপর সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “এত দিন টোটোর উপর পরিবহণ দফতরের কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। যত্রতত্র টোটো চলাচলের ফলে যানজটের সমস্যা বেড়েছিল। এখন নথিভুক্তির ফলে একটি সুস্পষ্ট ও সুষ্ঠু নীতি তৈরি করা সম্ভব হবে। তাই টোটো চালকদের লাইসেন্স দেওয়াও প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে।”
পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “টোটো নিবন্ধন শেষ হলে লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। জেলা ভিত্তিক অফিসগুলি দ্রুত সেই কাজ করবে।” দফতরের সূত্রের দাবি, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজ্যের রাজস্ব আদায়ও বৃদ্ধি পাবে।
তবে এই উদ্যোগ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন, “ঋণে ডুবে থাকা রাজ্য সরকার টোটো নিবন্ধনের নামে টাকা তুলতে চাইছে। নিবন্ধনের জন্য ১,০০০ টাকা ফি, তার সঙ্গে প্রতি মাসে ১০০ টাকা— বছরে ১,২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।” তাঁর কটাক্ষ, “রাজ্য সরকার এখন মূলত মদনির্ভর রাজস্বনীতি চালাচ্ছে। সামনে নির্বাচন, তাই এই টাকা সংগ্রহ ভবিষ্যতের রাজনৈতিক খরচের জন্য।”
এই সমালোচনার জবাবে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস পাল্টা বলেন, “টোটো চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্যই এই পদক্ষেপ। পরিবহণ দফতরের রাজস্ব কোনও ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কাজে খরচ হয় না, বরং পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়নেই ব্যবহার করা হয়।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজ্যের পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও সংগঠিত করার পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে বিরোধীদের অভিযোগ রাজ্য সরকারের রাজস্ব সংগ্রহনীতি ঘিরে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।