জলপাইগুড়ি: মালবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহাকে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে দল থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বহিষ্কার করল তৃণমূল। বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে জল্পনা চলছিল। অবশেষে মঙ্গলবার দলীয় শৃঙ্খলারক্ষার স্বার্থে তাঁকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব।
স্বপনের বিরুদ্ধে ১২০ কোটিরও বেশি টাকার দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি টাকা নিয়ে অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা তছরুপ, মার্কেটে দোকান বণ্টন থেকে শুরু করে অবৈধ নির্মাণে ছাড়পত্র দেওয়ার মতো একাধিক বেআইনি কাজ করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে স্বপনকে দলের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মহুয়া গোপ জানান, দলের উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ অনুসারে স্বপন সাহাকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফলাফলের পাশাপাশি, স্বপনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলোর গুরুত্ব বিচার করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে আমরা কোনও আপস করব না। যারা দলের সুনাম নষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
স্বপন সাহা অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গাড়িতে ওঠার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। আমার দুইটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যেকোনো সময় তা পরীক্ষা করা যেতে পারে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। ৪০ বছর ধরে দলের জন্য কাজ করেছি। দল যদি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তা মেনে নিচ্ছি, তবে এতে আমার খুবই দুঃখ হচ্ছে।’’
এই বহিষ্কার নিয়ে মালবাজারের রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূলের নেতৃত্বে এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ দলের ভাবমূর্তি রক্ষার প্রয়াস বলে মনে করা হচ্ছে।