কলকাতা ও উত্তরবঙ্গে চলতে থাকা জুনিয়র ডাক্তারদের ‘আমরণ অনশন’ সোমবার তুলে নিলেন। ৫ অক্টোবর ধর্মতলায় ছয় জন জুনিয়র ডাক্তার এই অনশন শুরু করেছিলেন। তাঁদের দাবির কেন্দ্রে ছিল আরজি করে চিকিৎসক খুনের বিচার, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠা। মঙ্গলবারের স্বাস্থ্য ধর্মঘটও বাতিল করা হয়েছে।
উত্তরের অনশনস্থল ছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, যেখানে উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজ এবং মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তাররা ভুখ হরতালে সামিল হয়েছিলেন। তাঁরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। চিকিৎসক দেবাশিস হালদার বলেন, “তিলোত্তমার বাবা মা এসেছেন, অনশনকারীদের কাছে এসে অনুরোধ করছেন অনশন তুলে নেওয়ার জন্য। আগামীকাল স্বাস্থ্য ধর্মঘট করছি না।”
প্রাথমিকভাবে ছয় জন ডাক্তার কলকাতায় ধর্মতলায় অনশন শুরু করেন, পরের দিন আরও ডাক্তাররা আন্দোলনে যোগ দেন। ১০ দফা দাবিতে তাঁরা অনড় ছিলেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল—নারায়ণস্বরূপ নিগমকে স্বাস্থ্যসচিবের পদ থেকে অপসারণ করা, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি ও অক্ষমতার দায় নিয়ে তদন্তের দাবি, প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চালু করা, এবং মেডিক্যাল কলেজে স্বচ্ছ রেফারেল সিস্টেম চালু করা।
নবান্নে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক মমতার, সাধারণের চোখ আটকে ফেসবুক লাইভে
তাঁদের দাবির মধ্যে আরও ছিল, প্রতিটি হাসপাতালে একটি করে ডিজিটাল মনিটর স্থাপন করা যা রোগীদের বেডের সংখ্যা জানানোর সুবিধা দেবে এবং হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদার ব্যবস্থা করতে হবে। শূন্যপদে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্রুত নিয়োগের দাবিও তুলেছিলেন অনশনকারীরা।
অনশন চলাকালীন বেশ কয়েকজন ডাক্তার অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১০ অক্টোবর অনিকেত মাহাতো অসুস্থ হয়ে আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর আরও কয়েকজন ডাক্তার অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অলোক বর্মাও অসুস্থ হয়ে ভর্তি হন। ধাপে ধাপে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ডাক্তাররা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। ১৯ অক্টোবর শেষ অসুস্থ ডাক্তার পুলস্ত্য আচার্য ছুটি পান নীলরতন হাসপাতাল থেকে।