রুপোর বাজারে নজিরবিহীন বৃদ্ধি। সোনার মতো রুপোর দামও ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী। সোমবার এক কেজি রুপোর দাম প্রথমবারের মতো ছাড়িয়ে গেল এক লক্ষ টাকার মাইলফলক। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কেবল বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঘটনাবলীর প্রতিফলন নয়, বরং শিল্প খাতে রুপোর ব্যবহার বৃদ্ধির ফলাফলও। কলকাতায় প্রতি কেজি খুচরো রুপোর দাম পৌঁছেছে ৯৭,৮৫০ টাকায়, যা জিএসটি যোগ করে ১,০০,৭৮৫.৫০ টাকায় পৌঁছেছে।
বিশ্ব পরিস্থিতি ও শিল্পের চাহিদা
বিশেষজ্ঞদের দাবি, পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধ এবং আমেরিকায় সুদের হার হ্রাসের প্রভাব সোনা এবং রুপোর দামে উল্লেখযোগ্যভাবে পড়েছে। বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিকল্প হিসেবে রুপোতে লগ্নি বাড়াচ্ছেন, ফলে চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে দামও বাড়ছে। জেজে গোল্ডের ডিরেক্টর হর্ষদ আজমেরা সাংবাদমাধ্যমকে বলেন, “রুপোর বাজারে এই বৃদ্ধি একদিকে যেমন বৈশ্বিক রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে, তেমনই অন্যদিকে শিল্পের চাহিদার কারণে।”
শিল্পে রুপোর ব্যবহার
রুপোর বড় অংশ শিল্পে ব্যবহৃত হয়। সৌর বিদ্যুৎ, সেমিকনডাক্টর, বৈদ্যুতিন পণ্য এবং ব্যাটারির মতো প্রযুক্তি-নির্ভর শিল্পগুলিতে রুপোর চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আজমেরা জানান, দেশের মোট ব্যবহৃত রুপোর ৩৫-৪০ শতাংশ শিল্প ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। শিল্পের এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা রুপোর মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ।
বিনিয়োগ ও উৎসবের মরসুমের প্রভাব
দেশের বাজারে সোনা এবং রূপো কেনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা সর্বদা সুরক্ষার খোঁজে থাকেন। এমডি সমর দে বলেন, “রুপোর ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণে এর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া সামনে ধনতেরস আসছে, যখন মানুষ রুপোর কয়েন, বাসন ইত্যাদি কিনে। উৎসবের এই চাহিদা দাম আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।”
ভবিষ্যতে দাম বৃদ্ধির শঙ্কা
ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ন মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি দীনেশ কাবরা বলেন, “সোনার দামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রুপোর দাম বৃদ্ধি পায়। তবে সাম্প্রতিককালে কিছুটা ঘাটতি থাকলেও রুপো এখন সেই ঘাটতি পূরণ করছে।” সাধারণ মানুষ, যারা সোনার উচ্চমূল্যের কারণে রুপোর দিকে ঝুঁকেছিলেন, তারাও এখন এই দামবৃদ্ধিতে বিপাকে পড়ছেন।