কলকাতা: একেবারে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল। এবার রাজ্যের দ্বাদশ শ্রেণির পাশাপাশি একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদেরও ট্যাব কিনতে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। ঠিক ছিল আগামী ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবসে পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো শুরু হবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাতিল করেছে শিক্ষা দফতর। সিদ্ধান্ত বাতিলের নির্দেশ ইতিমধ্যেই সব ট্রেজারিতে পৌঁছে গিয়েছে।
২০২১-এ করোনার সময় থেকেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার এক প্রকল্প চালু করে। নাম দেওয়া হয় ‘তরুণের স্বপ্ন’। এই প্রকল্প অনুসারে সরকারি এবং সরকার স্পনসর্ড সব স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই টাকায় যাতে তারা ট্যাব বা স্মার্টফোন কিনতে পারে তার জন্যই এই ব্যবস্থা। ২০২১ থেকে প্রত্যেক বছরই ওই টাকা দেওয়া হয়েছে।
গত বাজেটে ঘোষণা করা হয়, চলতি বছর থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাশাপাশি একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদেরও ট্যাব বা স্মার্টফোন কিনতে ওই টাকা দেওয়া হবে। এ জন্য অতিরিক্ত ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দও করেছিল অর্থ দফতর। কিন্তু হঠাৎই ওই সিদ্ধান্ত বদল। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত বদল তা সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, ‘প্রশাসনিক কারণে’ এই সিদ্ধান্ত। আগামী দিনে ওই টাকা দেওয়া হবে কি না বা দিলে তা কবে দেওয়া হবে সে ব্যাপারেও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে আসন্ন দুর্গাপুজোয় ক্লাব-পুজো কমিটিগুলি পুজো-অনুদান পাবে কি না সে ব্যাপারেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। গত ২৩ জুলাই নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে পুজো অনুদান বৃদ্ধির ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম যখন অনুদান দেওয়া শুরু হয় তখন টাকার অঙ্ক ছিল ২৫ হাজার। ২০২৩ সালে তা বাড়িয়ে করা হয় ৭০ হাজার টাকা। এ বছর আরও বাড়িয়ে করা হয়েছে ৮৫ হাজার টাকা।
দিনদশেক আগেই পুজো-অনুদানের চূড়ান্ত প্রশাসনিক প্রস্তুতিতে ছাড়পত্র দেয় নবান্ন। ৪৫ হাজারের কিছু বেশি পুজোর জন্য ৩৮৫ কোটি ৩৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দও হয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তত ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেই টাকা না ছাড়ার ব্যাপারে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশ এসেছে। তার পরেও কবে ছাড়া হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী ডাক্তারের ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় সারা রাজ্য উত্তাল। দোষীদের শাস্তির দাবিতে সর্ব স্তরের সব পেশার মানুষ আজ পথে। প্রতিদিন চলছে মিছিল-জমায়েত-অবস্থান-মানববন্ধন। এই আবহে বেশ কিছু পূজা সংগঠন অনুদান না নেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই সরকার ঢিলেমি করছে কি না তা বোঝা যাচ্ছে না।