খবর অনলাইন ডেস্ক: ১৪ নভেম্বর তো শিশু দিবস। কিন্তু এ দিন এক অদ্ভুত মিলনমেলার দিনও। এক দিকে বিশ্বের চিকিৎসকরা মানুষকে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব বোঝান — বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের মাধ্যমে। অন্য দিকে ওই দিনেই বাঙালি গর্বের সঙ্গে উদ্যাপন করে তার অন্যতম সাংস্কৃতিক পরিচয় — রসগোল্লা দিবস।
১৯৯১ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (IDF) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) দিনটি পালনের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি, প্রতিরোধ, জীবনযাপন ও নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব তুলে ধরছে। এই দিনে নানা চিকিৎসা-প্রতিষ্ঠান জনসচেতনতা বাড়াতে বিশেষ বার্তা দেয়।
অপর দিকে, ২০১৭ সালে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর বাংলা ‘বাঙলার রসগোল্লা’র জিআই ট্যাগ পায়। সেই বছরই রাজ্য সরকার ১৪ নভেম্বরকে ‘রসগোল্লা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করে। এর পর থেকে দিনটি কলকাতা-সহ গোটা বাংলায় মিষ্টিপ্রেমীদের কাছে উৎসবের সমার্থক হয়ে ওঠে। রসগোল্লা শুধু একটি মিষ্টি নয় — বাঙালির আবেগ, সংস্কৃতি ও উদ্যাপনের অনিবার্য অংশ। বিয়ে থেকে শুভক্ষণ — প্রতিটি অনুষ্ঠানের কেন্দ্রে থাকে এই নরম সাদা গোলাটি।

নলেন গুড়ের রসগোল্লা। ছবি ‘X’ থেকে নেওয়া।
এই মিষ্টির উৎসবে যখন শহর ডুবে থাকে, সে সময় চিকিৎসকরা মনে করিয়ে দেন ভারসাম্যের কথা। “শুধুমাত্র মিষ্টি খাওয়ার জন্য ডায়াবেটিস হয় না,” জানালেন ফোর্টিস হাসপাতালের ডাক্তার রচনা মজুমদার। তাঁর মতে, নিয়মিত অতিরিক্ত খাওয়া এবং অনিয়মিত জীবনযাপনই মূল সমস্যা। মাঝে মাঝে রসগোল্লা খাওয়া স্বাস্থ্যবান মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয় বলেও তিনি জানিয়েছেন।
বিএম বিড়লা হার্ট রিসার্চ সেন্টারের কার্ডিওলজিস্ট অঞ্জন সিওটিয়া বলেন, ডায়াবেটিস শুধু রক্তে শর্করার বিষয় নয়, এটি হৃদ্যন্ত্র, কিডনি, চোখ ও পায়ে জটিলতা তৈরি করতে পারে। “লক্ষ্য হওয়া উচিত জটিলতা প্রতিরোধ”, তিনি বলেন।
নারায়ণা হাসপাতালের সঞ্জয় কে শাহ মনে করিয়ে দেন, ঘন ঘন বেশি চিনি গ্রহণে বাড়ে ওজন ও রক্তে শর্করার মাত্রা এবং শরীরের ইনসুলিন প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে তিনি বাড়তি সতর্কতা ও রসগোল্লার সিরা ঝরিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এক দিকে স্বাস্থ্যসচেতনতার ডাক, অন্য দিকে সাংস্কৃতিক উদ্যাপন — ১৪ নভেম্বর তাই বাঙালির কাছে বৈপরীত্যের মিষ্টি স্মারক।


