স্বাধীনতার আগে যাত্রা শুরু করা বহু প্রাচীন স্কুল হোক কিংবা চলতি শতাব্দীর গোড়ার দিকের কোনও নবীন প্রতিষ্ঠান— রাজ্যের এমন ৩৪৮টি সরকারি স্কুল এখন কার্যত নির্জন। একটিও ছাত্রছাত্রী নেই। ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত একটিও ভর্তি হয়নি এই স্কুলগুলিতে। যার ফলে এই স্কুলগুলির নাম উঠেছে ‘জিরো এনরোলমেন্ট’ তালিকায়।
এই পরিস্থিতিতে বিকল্প ভাবনায় এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। নারী শিশু ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই পড়ুয়াশূন্য স্কুলগুলিতে স্থানান্তর করা হতে পারে বর্তমানে ক্লাব, ভাড়াবাড়ি বা গৃহস্থের উঠোনে চলা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিকে। ইতিমধ্যেই শিক্ষা দপ্তরের থেকে ওই ৩৪৮টি স্কুলের তালিকা পেয়েছে তারা এবং তা পাঠানো হয়েছে জেলায় জেলায়। জেলা আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোন স্কুলে কতগুলি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র স্থানান্তর করা যেতে পারে, তা খতিয়ে দেখতে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক চিত্র দেখা গেছে কলকাতায়। শহরের ১১৯টি সরকারি স্কুলে গত চার বছরে একজনও পড়ুয়া ভর্তি হয়নি। উত্তর ২৪ পরগনাতেও এমন ৬০টি স্কুলের খোঁজ মিলেছে। তালিকায় রয়েছে প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুল। এর মধ্যে বেশিরভাগই বাংলা মাধ্যম হলেও কিছু হিন্দি ও নেপালি মাধ্যমের স্কুলও রয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ ও উপস্থিতি নিয়েও জটিলতা রয়েছে। অনেক স্কুল থেকে বাড়তি শিক্ষককে বদলি করে অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। কিছু স্কুলে আবার শিক্ষক অবসর নেওয়ার পর আর নতুন নিয়োগ হয়নি।
এই চিত্রের পিছনে একাধিক কারণ চিহ্নিত করছেন শিক্ষকরা। অনেকের মতে, শহরে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। মাধ্যমিকের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সংগঠনের নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, “সঠিক শিক্ষানীতির অভাব, শিক্ষক ঘাটতি ও পরিকাঠামোগত দুর্বলতার জন্যই সরকারি স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পড়ুয়ারা।”
অন্যদিকে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিকে পরিকাঠামোসমৃদ্ধ স্কুল ভবনে নিয়ে আসার মাধ্যমে শিশুদের জন্য আরও নিরাপদ ও উন্নত পরিবেশ তৈরির দিকেও নজর দিচ্ছে রাজ্য। কারণ, বর্তমান অবস্থানে অনেক সময় পানীয় জল, শৌচালয়, রান্নাঘর বা বিদ্যুৎ পরিষেবার অভাব থাকে। স্কুলভবনে গেলে এই সমস্যাগুলি অনেকটাই মিটবে বলে আশা দপ্তরের