ভারত: ২৬৪-৯ (রোহিত শর্মা ৭৩, শ্রেয়স আয়ার ৬৩, অক্ষর পটেল ৪৪, অ্যাডাম জাম্পা ৪-৬০, জ্যাভিয়ের বার্টলেট ৩-৩৯)
অস্ট্রেলিয়া: ২৬৫-৮ (৪৬.২ ওভার) (ম্যাথু শর্ট ৭৪, কুপার কোনোলি ৬১ নট আউট, মিচেল ওয়েন ৩৬, ওয়াশিংটন সুন্দর ২-৩৭, অর্শদীপ সিংহ ২-৪১)
অ্যাডিলেড ওভাল (অস্ট্রেলিয়া): প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়াকে ২৬৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল ভারত। অ্যাডিলেডের এই মাঠে এই রান তাড়া করা খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। তার ওপর যখন অস্ট্রেলিয়ার দুই সেরা ব্যাটার মিচেল মার্শ (২৪ বলে ১১ রান) ও ট্র্যাভিস হেড (৪০ বলে ২৮ রান) বিশেষ কিছু রান ফিরে গেলেন, তখন লক্ষ্য আরও কঠিন ছিল। কিন্তু কেল্লা ফতে করলেন ম্যাথু শর্ট (৭৮ বলে ৭৪ রান), ম্যাট রেনশ (৩০ বলে ৩০ রান), কুপার কোনোলি (৫৩ বলে ৬১ রান নট আউট) এবং মিচেল ওয়েনের (২৩ বলে ৩৬ রান) মতো অনভিজ্ঞ ব্যাটারেরা। ৩.৪ ওভার বাকি থাকতেই অস্ট্রেলিয়া জিতে গেল ২ উইকেটে।
পার্থের পর অ্যাডিলেডে হেরে সিরিজ খোয়াল ভারত। বাকি রইল সিডনির নিয়মরক্ষার ম্যাচ। এক দিনের অধিনায়ক হিসাবে নিজের প্রথম সিরিজ হারতে হল শুভমন গিলকে। ৬০ রানে ৪ উইকেট দখল করে ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন অ্যাডাম জাম্পা।

রানে ফিরলেন রোহিত শর্মা। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
ব্যাটে সফল শ্রেয়স, অক্ষরও
বৃহস্পতিবার টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। শুরুতেই বিপাকে পড়ে শুভমনের দল। দলের ১৭ রানে শুভমন ফিরে গেলেন ৯ রান করে। দলের ওই একই রানে ফিরে গেলেন বিরাট কোহলি। আরও একটি ম্যাচে শূন্য রানে ফিরলেন তিনি। এক দিনের কেরিয়ারে এই প্রথম পর পর দু’ম্যাচে শূন্য রানে আউট হলেন কোহলি। কিন্তু খেল দেখালেন রোহিত শর্মা। থিতু হতে একটু সময় নিলেন। তার পর ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়ালেন। তাঁর সেই পুরনো কিছু পুল শট দেখা গেল। নিজের সঙ্গে লড়াইয়ে জিতলেন রোহিত। ৯৭ বলে ৭৩ রান করলেন। এই ইনিংসকে রোহিতের প্রত্যাবর্তনের শুরু বলা যেতে পারে।
কোহলি ফেরার সময় অ্যাডিলেডের দর্শকেরা উঠে দাঁড়িয়ে হাত নাড়লেন। তাঁদের দিকে গ্লাভস তুলে ‘গুডবাই’ জানালেন কোহলি। অ্যাডিলেডের মাঠে ৯৭৫ রান রয়েছে তাঁর। সেখানেই শূন্য রানে আউট হয়ে যাওয়াটা হতাশজনক ব্যাপার। তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাঁর আর একটিই ইনিংস বাকি। এর পর আর এই দেশে খেলা হবে না।
রোহিত ছাড়াও রান পেলেন শ্রেয়স (৭৭ বলে ৬১ রান) এবং অক্ষর পটেল (৪১ বলে ৪৪ রান)। কিন্তু পর পর উইকেট পড়ায় চাপ বাড়ে ভারতের উপর। তবে নবম উইকেটে হর্ষিত রানা (২৪) ও অর্শদীপ সিংহ (১৩) ভারতের রান ২৫০ পার করেন। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ২৬৪ রান করে ভারত। অ্যাডাম জাম্পা ৬০ রানে ৪ উইকেট এবং জ্যাভিয়ের বার্টলেট ৩৯ রানে ৩ উইকেট নেন।

এই উচ্ছ্বাস ধরে রাখতে পারল না ভারত। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
ক্যাচ ফেলার খেসারত দিল ভারত
অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার মিচেল মার্শ ও ট্র্যাভিস হেডও শুরুটা ধীরেই করেন। কিন্তু হাত খুলতে গিয়েই হয় বিপত্তি। ১১ রানের মাথায় মার্শকে ফেরান অর্শদীপ সিংহ। হেড ২৮ রান করে হর্ষিতের বলে আউট হন। তৃতীয় উইকেটে ম্যাথু শর্ট ও ম্যাট রেনশ জুটি বাঁধেন। ওদিকে ক্যাচ ফেলার সমস্যা ভারতকে ভোগায়। শর্টের ক্যাচ দুবার পড়ল। মহম্মদ সিরাজ লোপ্পা ক্যাচ ছাড়লেন। আর তারই সুযোগে শর্ট করলেন ৭৪ রান।
শর্ট আউট হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস টানলেন কুপার কোনোলি। তাঁকে সঙ্গ দিলেন মিচেল ওয়েন। ওয়েন যখন ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে আউট হয়ে মাঠ ছাড়লেন, তখন জয় থেকে মাত্র ১৯ রান দূরে ছিল অস্ট্রেলিয়া। হাতে ৭.৩ ওভার অর্থাৎ ৪৫ বল। কাজটা খুবই সহজ। এরই মধ্যে আরও ২টি উইকেট পড়ল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু কোনোলি শেষ পর্যন্ত থাকলেন। ৬১ রানে অপরাজিত থাকলেন। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন কোনোলি।