ভারত: ১৭১-৭ (রোহিত শর্মা ৫৭, সূর্যকুমার যাদব ৪৭, খ্রিস জর্ডান ৩-৩৭)
ইংল্যান্ড: ১০৩ (১৬.৪ ওভার) (হ্যারি ব্রুক ২৫, জোস বাটলার ২৩, কুলদীপ যাদব ৩-১৯, অক্ষর পটেল ৩-২৩)
খবর অনলাইন ডেস্ক: ২০১৪-এর পর ২০২৪। দশ বছর পরে টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে গেল ভারত। তাদের শক্তির কাছে গুঁড়িয়ে গেল ইংল্যান্ড। ২০ বল বাকি থাকতেই ৬৮ রানে হেরে গেল তারা। শনিবার ভারতীয় সময় রাত ৮টায় বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে কেনসিংটন ওভালে সাউথ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে ভারত।
গুয়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় ইংল্যান্ড। রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদব এবং কিছুটা হার্দিক পাণ্ড্যর ব্যাটিং-এর সুবাদে ভারত পৌঁছে যায় ৭ উইকেটে ১৭১-এ। জবাবে ইংল্যান্ড ১০৩ রানে গুটিয়ে যায়। কুলদীপ যাদব, অক্ষর পটেল এবং জসপ্রীত বুমরাহের বোলিং-এর মোকাবিলাই করতে পারল না ইংল্যান্ড। ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন অক্ষর পটেল।
রোহিতের অর্ধশত রান, সূর্যকুমার ৩ রান দূরে
গুয়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামের মাঠ বৃষ্টির জন্য ভিজে থাকায় সেমিফাইনালে ম্যাচ নির্দিষ্ট সময়ের সোয়া ঘন্টা পরে শুরু হয়। ৪০ রানের মধ্যে ২টি উইকেট পড়ার পর পরিস্থিতি সামাল দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং সূর্যকুমার যাদব। দলের ১৯ রানের মাথায় ৯ রান করে রিস টপলের বলে বোল্ড হন বিরাট কোহলি। এর পর ঋষভ পন্থও বেশিক্ষণ টিকলেন না। মাত্র ৪ রান করে স্যাম কুরানের বলে জনি বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন। দলের রান তখন ৪০।
এদিকে রোহিত ব্যাটিং-এ ঝড় তোলেন। তাঁর সঙ্গী সূর্যকুমার যাদবও একটু একটু করে এগোতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর আবার বৃষ্টি নামে। আবার সোয়া ঘণ্টা মতো সময় নষ্ট হয়। খেলা ফের শুরু হতেই শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন রোহিত আর সূর্য। ত্রয়োদশ ওভারের তৃতীয় বলে স্যাম কুরানকে ছয় মেরে নিজের অর্ধশত রান পূর্ণ করেন রোহিত। ত্রয়োদশ ওভারের শেষে ভারতের রান দাঁড়ায় ২ উইকেটে ১১০। রোহিত ৫৭ এবং সূর্যকুমার ৪১ রানে নট আউট থাকেন। কিন্তু পরের ওভারেই এল ধাক্কা। ৩৯ বলে ৫৭ রান করে আদিল রশিদের বলে বোল্ড হন রোহিত। রোহিতের ৫৭ রানে ছিল ২টো ছয় এবং ৬টা চার। সূর্যকুমারের সঙ্গী হন হার্দিক পাণ্ড্য।
মাত্র ৩ রানের জন্য অর্ধশত রান হাতছাড়া হল সূর্যকুমারের। ৩৬ বলে ৪৭ রান করে জোফরা আর্চারের বলে একেবারে সীমানার ধারে বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সূর্যকুমার। ভারতের রান তখন ৪ উইকেটে ১২৪ রান। ক্রিজে আসেন রবীন্দ্র জাদেজা। হাতে তখন ৪.২ ওভার। ভালো খেলছিলেন হার্দিক। খ্রিস জর্ডানকে পর পর দুটো ছয় মারলেন। কিন্তু তৃতীয় বলেই সীমানার ধারে স্যাম কুরানকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন হার্দিক। নামলেন শিবম দুবে। পরের বলেই জোস বাটলারকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নমুখো হলেন তিনি। ভারত পর পর ২টো উইকেট হারাল। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে জর্ডানের বলে ফিল সল্টকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন অক্ষর পটেল। ইনিংসের শেষ বলে অর্শদীপ সিং ১ রান নিলেন। ভারতের ইনিংস শেষ হল ১৭১ রানে। জাদেজা নট আউট থাকলেন ৯ বলে ১৭ রান করে। ভারতের ৭টি উইকেট ভাগ করে নিলেন ইংল্যান্ডের বোলাররা। তাঁরই মধ্যে ৩৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিলেন খ্রিস জর্ডান।
উল্লসিত ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ অক্ষর পটেল। ছবি আইসিসি-র ‘এক্স’ হ্যান্ডেক থেকে নেওয়া।
তেড়েফুঁড়ে নেমে সহজেই গুটিয়ে গেল ইংল্যান্ড
জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছোনোর জন্য বেশ তেড়েফুঁড়ে নেমেছিল ইংল্যান্ড। তাদের অন্যতম ওপেনার জোস বাটলার বেশ দ্রুত গতিতে রানও করছিলেন। কিন্তু ১৫ বলে ২৩ রান করে অক্ষর পটেলের বলে উইকেটকিপার ঋষভ পন্থের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতেই শুরু হয়ে গেল ইংল্যান্ডের উইকেট পতন। ৩.১ ওভারে ১ উইকেটে ২৬ রান। মইন আলি সঙ্গী হন ফিল সল্টের। দলের স্কোরের সঙ্গে ৮ রান যোগ হতেই বিদায় নেন সল্ট (৮ বলে ৫ রান)। সল্টকে বোল্ড করেন জসপ্রীত বুমরাহ। ১ রান যোগ হতে না হতেই আবার উইকেট পতন। শূন্য রানে ফিরে গেলেন জনি বেয়ারস্টো অক্ষর পটেলের বলে বোল্ড হয়ে। ইংল্যান্ড ৫.১ ওভারে ৩ উইকেটে ৩৫ রান।
মইন আলির সঙ্গী হলেন হ্যারি ব্রুক। কিন্তু ২ ওভার যেতে না যেতেই মইনকে তুলে নিলেন সেই অক্ষর পটেল। ১০ বলে ৮ রান করে দলের ৪৬ রানের মাথায় ঋষভকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন মইন। নামলেন স্যাম কুরান। এবং ৬ বল পরে ফিরেও গেলেন। ২ রান করে কুলদীপ যাদবের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। দলের স্কোর দাঁড়াল ৫ উইকেটে ৪৯। হ্যারি ব্রুকের সঙ্গী হলেন লিয়াম লিভিংস্টোন। ঘন ঘন উইকেট পড়ার মাঝে কিছুটা রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন হ্যারি ব্রুক। কিন্তু দলীয় ৬৮ রানের মাথায় তিনিও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। ১৯ বলে ২৫ রান করে কুলদীপ যাদবের বলে বোল্ড হন তিনি।
লিভিংস্টোনের সঙ্গী হন খ্রিশ জর্ডান। দলের স্কোরের সঙ্গে আর ৪ রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন জর্ডান, কুলদীপের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। ক্রিজে আসেন জোফরা আর্চার। এর পর রান আউট। ১৬ বলে ১১ রান করে রান আউট হয়ে ফিরে গেলেন লিয়াম লিভিংস্টোন। আর্চারের সঙ্গী হন আদিল রশিদ। ২ রান করে রান আউট হয়ে ফিরে গেলেন রশিদ। শেষ ব্যাটার রিস টপলে। শেষ উইকেটে ১৫ রান যোগ করলেন আর্চার-টপলে জুটি। শেষ পর্যন্ত ১৫ বলে ২১ করে বুমরাহের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যেতেই শেষ হল ইংল্যান্ডের লড়াই। ৩.২ ওভার বাকি থাকতেই ভারতের কাছে তারা হেরে গেল ৬৮ রানে।
আরও পড়ুন
আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৪: আফগানিস্তানের স্বপ্নভঙ্গ, এই প্রথম পুরুষদের বিশ্বকাপ ফাইনালে সাউথ আফ্রিকা