ভারত: ৪১০-৪ (শ্রেয়স আইয়ার ১২৮ নট আউট, কে এল রাহুল ১০২, বাস ডে লিডে ২-৮২)
নেদারল্যান্ডস: (তেজা নিদামানুরু ৫৪, সিব্রান্ড এনগেলব্রেশট্ ৪৫, মোহম্মদ সিরাজ ২-২৯, জসপ্রীত বুমরাহ ২-৩৩)
বেঙ্গালুরু: একশোয় একশো। থুড়ি, নয়ে নয়। ভারতের দিক থেকে বিশ্বকাপে রেকর্ড। টানা ৯টি ম্যাচ জেতার রেকর্ড। এর আগে ২০০৩ বিশ্বকাপে সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বে ভারত টানা ৮টি ম্যাচ জিতেছিল।
রবিবার বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে ভারত প্রথম ব্যাট করে ৪ উইকেটে ৪১০ রান করে। জবাবে নেদারল্যান্ডস ২.১ ওভার বাকি থাকতেই ২৫০ রানে গুটিয়ে যায়। ফলে ভারত জিতে যায় ১৬০ রানে। ভারতের এই জয়ের পিছনে প্রথম পাঁচ ব্যাটারেরই অবদান আছে – অধিনায়ক রোহিত শর্মা, শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার এবং কে এল রাহুল। পাঁচ জন ব্যাটারই অর্ধশত রান করেন। এঁদের মধ্যে দু’জন সেঞ্চুরি করেন – শ্রেয়স আইয়ার এবং দলের উইকেটকিপার কে এল রাহুল। এই দু’জনের মধ্যে আবার শ্রেয়স নট আউট থাকেন।
ভিত গড়লেন রোহিত, শুভমন
ডাচ বোলারদের বিরুদ্ধে স্বচ্ছন্দে ব্যাট করেন ভারতীয় ব্যাটার। ডাচ বোলাররা কোনো বেগই দিতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটারদের। প্রথম উইকেটের জুটিতে ১০০ রান করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং শুভমন গিল। গোড়া থেকেই দুই ব্যাটার প্রচণ্ড মারমুখী ছিলেন। তবে শুভমন কিছুটা বেশি। তাঁরা ১০০ রান করেন ১১.৫ ওভারে। ৩২ বলে ৫১ রান করে প্রথম প্যাভিলিয়নে পা বাড়ান শুভমন। শুভমনকে হারিয়ে রোহিত বেশিক্ষণ উইকেটে ছিলেন না। দলের ১২৯ রানের মাথায় তিনিও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। রোহিত করেন ৫৪ বলে ৬১ রান। বিরাট কোহলিকে সঙ্গ দিতে নামেন শ্রেয়স আইয়ার। দু’জনে তৃতীয় উইকেটের জুটিতে ৭১ রান যোগ করেন। ইতিমধ্যে বিরাট তাঁর অর্ধশত রান পূর্ণ করেন। শেষ পর্যন্ত ৫৬ বলে ৫১ রান করে দলের ২০০ রানের মাথায় তিনি বিদায় নেন।
এর পর শ্রেয়স এবং রাহুল চুটিয়ে খেলতে থাকেন। তাঁরা তাঁদের অর্ধশত রান পূর্ণ করে এগিয়ে যেতে থাকেন। এক সময়ে দু’জনে শতরানও করে ফেলেন। এঁদের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল এই জুটি অবিচ্ছেদ্য থেকে ৫০ ওভার পূর্ণ করবেন। কিন্তু নির্ধারিত ৫০ ওভারের মাত্র ১ বল বাকি থাকতে আউট হয়ে যান রাহুল। চতুর্থ উইকেটের জুটিতে শ্রেয়স ও রাহুল ২০৮ রান যোগ করেন। রাহুল করেন ৬৪ বলে ১০২ রান। তাঁর ১০২ রানে ছিল ৪টে ছয় এবং ১১টা চার। এই অঙ্কই বলে দেবে ডাচ বোলারদের বিরুদ্ধে কতটা আক্রমণাত্মক ছিলেন রাহুল। ইনিংসের ১টি বল বাকি ছিল। সূর্যকুমার যাদব ওই ১টি বল খেলে ২ রান করে নট আউট থাকেন। ৯৪ বলে ১২৮ করে নট আউট থাকেন শ্রেয়স। তাঁরা রানে ছিল ৫টা ছয় এবং ১০টা চার।
উইকেট পেলেন বিরাট, রোহিতও
জয়ের জন্য ৪১১ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে ডাচ ব্যাটাররা খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। তবে তাঁরাই ধরেই নিয়েছিলেন এই রান তাড়া করে জেতা প্রায় অসম্ভব। ইনিংসের শুরুতেই প্রথম উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। দলের ৫ রানের মাথায় মোহম্মদ সিরাজ তুলে নেন ওয়েসলে বারেসিকে। এর পর অবশ্য মাক্স ও’ডাওড এবং কোলিন আকারমান ঠান্ডা মাথায় খেলতে থাকেন। দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে তাঁরা যোগ করেন ৬১ রান। দলের ৬৬ রানে কুলদীপ যাদবের বলে এলবিডব্লিউ আকারমান। এর পর মাত্র ৬ রান যোগ হতেই ডাচেরা তৃতীয় উইকেট হারায়। রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হন ও’ডাওড।
এর পর মোটামুটি নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে। তারই মধ্যে সিব্রান্ড এনগেলব্রেশট্ এবং তেজা নিদামানুরু কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেন। মূলত তাঁদের চেষ্টায় নেদারল্যান্ডস পৌঁছোয় ২৫০ রানে। এনগেলব্রেশট্ করেন ৮০ বলে ৪৫। তাঁকে বোল্ড করেন মোহম্মদ সিরাজ। নিদামানুরু ৩৯ বলে ৫৪ রান করে রোহিত শর্মার বলে মোহম্মদ শামিকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। ২.১ ওভার বাকি থাকতেই শেষ হয়ে যায় ডাচদের ইনিংস। ভারত জিতে যায় ১৬০ রানে।
ভারতের হয়ে প্রায় সবাই বল করেন। শুধুমাত্র শ্রেয়স আইয়ার এবং কে এল রাহুল বল করেননি। নেদারল্যান্ডসের উইকেটগুলো সবাই ভাগাভাগি করে নেন। জসপ্রীত বুমরাহ, মোহম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব ও রবীন্দ্র যাদব ২টি করে উইকেট এবং বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা ১টি করে উইকেট দখল করেন। এ দিন ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন শ্রেয়স আইয়ার।
সেমিতে ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া
রবিবার ভারত-নেদারল্যান্ডস ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হল লিগ পর্যায়ের খেলা। প্রথম চারটি স্থানে থাকল ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। পঞ্চম থেকে দশম স্থানে থাকল পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং নেদারল্যান্ডস।
আরও পড়ুন