ভারত: ২৪৭ (হরলীন দেওল ৪৬, রিচা ঘোষ ৩৫ নট আউট, ডায়ানা বেগ ৪-৬৯, ফতিমা সানা ২-৩৮)
পাকিস্তান: ১৫৯ (৪৩ ওভার): (সিদ্রা আমিন ৮১, নাতালিয়া পারভেজ ৩৩, ক্রান্তি গৌড় ৩-২০, দীপ্তি শর্মা ৩-৪৫)
কলম্বো: পর পর চারটে রবিবার সুখবর এল ভারতের ঘরে। সব খবরই ক্রিকেটের। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের খবর। এর আগের তিনটি রবিবারে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছিল ভারত। প্রথমে লিগ পর্যায়ে জয়, তার পরে সুপার ফোরে। শেষে গত রবিবার ফাইনালে। এ বার ভারতের জয় এল মহিলাদের একদিনের ক্রিকেটে বিশ্বকাপে।
কলম্বোর আর প্রেমদাস স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় পাকিস্তান। ভারত প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগায় এবং নির্ধারিত ৫০ ওভারে করে ২৪৭ রান। জবাব নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৭ ওভার বাকি থাকতেই পাকিস্তান গুটিয়ে যায়। তাড়া করে ১৫৯ রান। ভারত জিতে যায় ৮৮ রানে। ২০ রানে ৩ উইকেট দখল করে এ দিন ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন ভারতের পেসার ক্রান্তি গৌড়। ২টি ম্যাচ থেকে ৪ পয়েন্ট পেয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে চলে গেল ভারত। আর ২টি ম্যাচের দুটোতেই হেরে পাকিস্তান থাকল ষষ্ঠ স্থানে।

রিচার ব্যাটিং নজর কাড়ল। ছবি BCCI Women ‘X’ থেকে নেওয়া।
শেষ দিকে ঝড় তুললেন রিচা ঘোষ
ভারতের ইনিংসের সূচনা করেন প্রতীকা রাওয়াল ও স্মৃতি মন্ধানা। ৩২ বলে ২৩ রান করে নবম ওভারে ফতিমা সানার শেষ বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান স্মৃতি। ভারতের স্কোর তখন ৪৮। প্রতীকার সঙ্গী হন হরলীন দেওল। ১৯ রান যোগ হতেই ফিরে যান প্রতীকা। ৩৭ বলে ৩১ রান করে সাদিক ইকবালের বলে বোল্ড হন। হরলীনের সঙ্গী হন দলের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর। দু’জনে দলের রান ১০০ পার করে দেন।
হরলীন আর হরমনপ্রীত তৃতীয় উইকেটের জুটিতে যোগ করেন ৩৯ রান। ৩৪ বলে ১৯ রান করে ডায়না বেগের বলে সিদ্রা নওয়াজকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন হরমন। এর পর দলের রান এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পড়ে হরলীন ও জেমিমা রডরিগুয়েজের উপর। কিন্তু ৪ রানের জন্য হাফসেঞ্চুরি মিস করলেন হরলীন। ৬৫ বলে ৪৬ রান করে রমিন শামিমের শিকার হলেন তিনি। ক্যাচ দিলেন নসরা সাঁধুকে। দলের চতুর্থ উইকেট পড়ল ১৫১ রানে। জেমিমার সঙ্গে জুটি বাঁধলেন দীপ্তি শর্মা।
মাত্র ৮ রান যোগ হতেই ফিরে গেলেন জেমিমা। ৩৭ বলে ৩২ রান করে সাঁধুর বলে এলবিডব্লিউ হন। দীপ্তির সঙ্গে এবার হাল ধরেন স্নেহা রানা। ৩৩ বলে ২০ রান করে ফিরে যান স্নেহা। ফতিমার দ্বিতীয় উইকেট। বাংলার রিচা ঘোষ জুটি বাঁধেন দীপ্তির সঙ্গে। কিন্তু দলের স্কোরে মাত্র ২ রান যোগ হতেই ২০৩ রানের মাথায় ডায়ানা বেগের শিকার হয়ে ফিরে গেলেন দীপ্তি ৩৩ বলে ২৫ রান করে। এটি ডায়ানার দ্বিতীয় উইকেট।
আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ঝড় তুললেন রিচা। রিচার ঝড়েই ভারত নির্ধারিত ৫০ ওভারে পৌঁছোল ২৪৭-এ। শেষের দিকের ব্যাটার শ্রী চরণীকে তুলে নিলেন সাদিক ইকবাল। আর ডায়ানার শিকার হলেন ক্রান্তি গৌড় আর রেণুকা সিংহ। ২০ বলে ৩৫ রান করে নট আউট থাকলেন রিচা। ৬৯ রান দিয়ে ৪টি উইকেট দখল করলেন ডায়ানা বেগ।

‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ ক্রান্তি গৌড়কে জড়িয়ে ধরলেন অধিনায়ক। ছবি BCCI Women ‘X’ থেকে নেওয়া।
সহজেই গুটিয়ে গেল পাকিস্তান
২৪৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে ২৬ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় পাকিস্তান। ১টি করে উইকেট তুলে নেন দীপ্তি শর্মা, ক্রান্তি গৌড় এবং স্নেহা রানা। এর পর চতুর্থ উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়েন সিদ্রা আমিন ও নাতালিয়া পারভেজ। পাকিস্তানের ইনিংসে এই দুই ব্যাটারের অবদানই উল্লেখ করার মতো। নাতালিয়া করেন ৬৬ বলে ৩৩ রান। তাঁকে প্যাভিলিয়নে ফেরান গৌড়।
এর পর আবার ঘন ঘন উইকেট পড়তে থাকে। একমাত্র ভারতীয় বোলারদের তুড়ি মেরে খেলতে থাকেন আমিন। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাঁর, কাউকে সঙ্গী পেলেন না। যতটুকু করার একাই করলেন। ১০৬ বলে ৮১ রান করে স্নেহা রানার বলে অধিনায়ক হরমনপ্রীতকে ক্যাচ দিয়ে আমিন যখন ফিরে গেলেন তখন পাকিস্তানের রান ১৫০ রান। এটি ছিল পাকিস্তানের অষ্টম উইকেট। বাকি ২টি উইকেটে পাকিস্তান আর যোগ করে ৯ রান। শেষ পর্যন্ত ১৫৯ রানে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। ভারত জিতে গেল ৮৮ রানে।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ মহিলা ক্রিকেট: বৃষ্টিতে ভেস্তে গেল অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ, পয়েন্ট ভাগাভাগি
বিশ্বকাপ মহিলা ক্রিকেট: ২১তম ওভারে ৬৯ রানে প্রোটিয়াদের ইনিংস শেষ, ইংল্যান্ড জিতল ১০ উইকেটে