বাংলাদেশ: ৩৩৪-৫ (মেহিদি ১১২, শান্ত ১০৪, নাইব ১-৫৮)
আফগানিস্তান: ২৪৫ (৪৩.৪ ওভার) (ইব্রাহিম ৭৫, শাহিদি ৫১, তাসকিন ৪-৪৪, শরিফুল ৩-৩৬)
লাহোর: আগের দিন শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে কিছুটা বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের সুপার ৪-এ যেতে হলে রবিবার তাদের জিততেই হত আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আফগানিস্তান আর হেলাফেলার দল নয়। তাদের কোয়ালিফাইং রাউন্ড খেলে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মূল পর্বে খেলতে হয় না। তারা সরাসরিই মূল পর্বে খেলে। সুতরাং সেই আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জেতাটা যে খুব সহজ নয় তা বাংলাদেশ ভালোই জানত। কিন্তু রবিবার সেই কাজটা সহজেই সম্পন্ন করল তারা।
প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ করে ৫ উইকেটে ৩৩৪। হিসেব বলছিল, সুপার ৪-এ যেতে হলে আফগানিস্তানকে ২৭৯ রানের মধ্যে বেঁধে রাখতে হবে। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান ২৪৫ রানে ইনিংস শেষ করে। ফলে নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে প্রতিপক্ষকে বেঁধে রেখে তাদের ৮৯ রানে হারিয়ে বাংলাদেশ চলে গেল সুপার ৪-এ।
বাংলাদেশের দুর্দান্ত ব্যাটিং
এ দিন লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে আয়োজিত গ্রুপ ‘বি’-র ম্যাচে টসে জিতে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট নেয়। ওপেনিং জুটি মহম্মদ নাইম এবং মেহিদি হাসান মিরাজ ভালোই শুরু করেন আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। আফগানিস্তানের বোলাররা বাংলাদেশের ব্যাটারদের ওপরে কখনোই তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি।
বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায় ৬০ রানে। নাইম ৩২ বলে ২৮ রান করে মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হন। ৩ রান পরেই আবার উইকেট পতন। তিন নম্বর ব্যাটার তৌহিদ হৃদয় কোনো রান না করেই গুলবাদিন নাইবের বলে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে পা বাড়ান।
মেহিদির সঙ্গে যোগ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এবং খেলার ধরন একেবারেই পালটে যায়। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে দু’জনে যোগ করেন ১৯৪ রান। ইতিমধ্যে মেহিদির শতরান সম্পূর্ণ হয়। দলের ২৫৭ রানের মাথায় আহত হয়ে ম্যাচ থেকে সরে দাঁড়ান মেহিদি। এর পর শান্তর সেঞ্চুরি এবং মুসফিকুর রহমান ও শাকিব আল হাসানের বাটিংয়ের ভর করে বাংলাদেশ পৌঁছে যায় ৩৩৪ রানে। মুসফিকুর ২৫ রান করে রান আউট হন এবং শাকিব ৩২ রান করে নট আউট থাকেন।
২৪৫-এ গুটিয়ে গেল আফগানরা
জয়ের জন্য আফগানিস্তানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৫ রান। দলের ১ রানের মাথায় তারা প্রথম উইকেট হারায়। রহমানুল্লাহ গুলবাজ ১ রান করে শরিফুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হন। দলের হাল ধরেন ইব্রাহিম জাদরান। আফগানিস্তান কিন্তু তুলনামূলক ভাবে খুব খারাপ খেলেনি।
দলের দ্বিতীয় উইকেট পড়ে ৭৯ রানে। ৩৩ রান করে তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হন রহমত শাহ। ইব্রাহিমের সঙ্গে জুটি বাঁধেন হাশমাতুল্লা শাহিদি। তাঁরা দলকে একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু দলের ১৩১ রানের মাথায় ৭৫ রান করে ইব্রাহিম আউট হন হাসান মাহমুদের বলে মুসফিকুরের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
খেলতে থাকেন শাহিদি এবং নাজিবুল্লাহ জাদরান। কিন্তু দলের ১৯৩ রানের মাথায় নাজিবুল্লাহ আউট হতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে আফগানিস্তান। বাকি ৬টি উইকেট পড়ে যায় ৫২ রানের মধ্যে। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ভেলকি দেখান তাসকিন আহমেদ (৪-৪৪) এবং শরিফুল ইসলাম (৩-৩৬)। মেহেদি হাসান মিরাজ ‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হন।