কেরল ব্লাস্টার্স এফসি:২ (দাইসুকে সাকাই, দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস) ইস্টবেঙ্গল এফসি: ১ (ক্লাইটন সিলভা)
কলকাতা: এ ভাবেও সুযোগ হাতছাড়া হয়! ম্যাচের ৮৫ মিনিটে কেরল ব্লাস্টার্স এফসি-র গোলকিপার সচিন সুরেশের ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল এফসি। বল নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক ক্লাইটন সিলভা একেবারে কেরলের গোলের কাছাকাছি চলে এসেছিলেন। তাঁর পা থেকে বল ছিনিয়ে নিতে গিয়ে তাঁর পায়েই আঘাত করে বসেন সচিন এবং রেফারি ন্যায্য কারণেই পেনাল্টি দেন। ক্লাইটন পেনাল্টি শট নেওয়ার সময় সচিন লাইন থেকে এগিয়ে এসে সেই শট বাঁচান। ফলে রেফারি ক্লাইটনকে আবার পেনাল্টি মারার সুযোগ দেন। কিন্তু এ বারের সুযোগও কাজে লাগাতে পারলেন না ক্লাইটন। সচিন গোললাইনে দাঁড়িয়েই দুর্দান্ত ভাবে বাঁচিয়ে দেন ক্লাইটনের শট।
এ ভাবেই ম্যাচে সমতা ফেরার সুযোগ হারায় ইস্টবেঙ্গল। এক গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় যে ভাবে এ দিন পেনাল্টি মিস করলেন ব্রাজিলীয় তারকা ফরোয়ার্ড ক্লাইটন সিলভা, তা অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হয়।
৬ ম্যাচের মধ্যে ৪টি জিতে এবং ১টি ড্র করে এখনও পর্যন্ত কেরলের সংগ্রহ ১৩ পয়েন্ট। তারা লিগ তালিকায় উঠে এল শীর্ষ স্থানে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। তাদের সংগ্রহ ১২ পয়েন্ট। তারা অবশ্য কেরলের থেকে ২টি ম্যাচ কম খেলে এই পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। অর্থাৎ তারা ৪টি ম্যাচই জিতেছে।
আর এ দিন কেরলের কাছে হারের পর টানা ৩টি ম্যাচে হারল ইস্টবেঙ্গল। এখনও পর্যন্ত ৫টি ম্যাচের মধ্য ১টিতে জিতে এবং ১টি ড্র করে তাদের সংগ্রহ মাত্র ৪ পয়েন্ট। ১২টি দলের এই টুর্নামেন্টে লিগ টেবিলে ইস্টবেঙ্গল থাকল দশম স্থানে।
আক্রমণে এ দিন যতটা বিষহীন লেগেছে ইস্টবেঙ্গলকে, রক্ষণে তার চেয়ে বেশি দুর্বল মনে হয়েছে তাদের। ঘরের মাঠে খেলা। গ্যালারি থেকে হাজার হাজার দর্শকের সমর্থন। তা সত্ত্বেও লাল-হলুদ ফুটবলাররা উজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারলেন না। বরং ইস্টবেঙ্গলের মাঠে এসে এ দিন দুর্দান্ত ফুটবল দেখাল কেরল ব্লাস্টার্স। তাদের উজ্জীবিত ফুটবল রীতিমতো ছত্রভঙ্গ করে দেয় লাল-হলুদ বাহিনীকে। বরাবরের মতো এ দিনও দলকে সাফল্যের রাস্তা দেখিয়ে দেন তাদের অধিনায়ক আদ্রিয়ান লুনাই। তবে এ দিন তাদের জয়ের পিছনে তরুণ গোলকিপার সচিন সুরেশের অসাধারণ পারফরম্যান্সের কথা বলতেই হয়।
ম্যাচের ৩২ মিনিটের মাথায় কেরল এগিয়ে যায় জাপানি তারকা দাইসুকে সাকাইয়ের গোলে। উরুগুয়ের তারকা ফরোয়ার্ড লুনাই মাঝমাঠ পেরিয়ে বাঁ দিকে সাকাইকে লক্ষ্য করে ফরোয়ার্ড পাস বাড়ান। তখন ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণে কার্যত কেউ ছিলেন না। সামনে একমাত্র গোলকিপার প্রভসুখন গিল। দাইসুকে সাকাই বক্সে ঢুকে গোলের ডানদিকের কোণ দিয়ে জালে বল জড়িয়ে দেন। প্রথমার্ধে কেরল এগিয়ে থাকে ১-০ গোলে।
দ্বিতীয়ার্ধে ২টি গোল
ম্যাচের ৮৬ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ ইস্টবেঙ্গল হাতছাড়া করার ২ মিনিট পরেই দ্বিতীয় গোলটি করে বসে কেরল। ৮৮ মিনিটের মাথায় সন্দীপ সিংয়ের বাড়ানো বল মোহম্মদ রকিপ বক্সের মধ্যে ব্লক করতে না পারায় তা ছিটকে চলে আসে সম্পুর্ণ অরক্ষিত গ্রিক স্ট্রাইকার দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোসের পায়ে। এই পরিস্থিতিতে গোল করতে কোনো ভুলচুক করেননি তিনি। কিন্তু জার্সি খুলে উল্লাস করার জন্য তাঁকে হলুদ কার্ড দেখতে হয়। এটা ছিল এই ম্যাচে তাঁর দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। ফলে ৮৯ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় দিয়ামান্তাকোসকে।
তবে ম্যাচের একদম শেষ দিকে একটি গোল শোধ করে ইস্টবেঙ্গল। সেই গোলটি আসে পেনাল্টি থেকে। নির্ধারিত সময়ের পর আরও দশ মিনিট খেলা গড়ায়। নবম মিনিটে নিজেদের বক্সের মধ্যে উড়ে আসা বলের দখল নিতে গিয়ে হাত লাগিয়ে ফেলেন কেরলের সন্দীপ সিং। ফলে আবার পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। এ বারও শট নিতে যান ক্লাইটন নিজেই। তবে এ বার আর ভুল করেননি। পেনাল্টি থেকে গোল করে কেরলের জয়ের ব্যবধান কমান ক্লাইটন। কেরল ২-১ গোলে ইস্টবেঙ্গলকে হারায়।
আরও পড়ুন