কলকাতা: অবশেষে পয়েন্টের খাতা খুলল ইস্টবেঙ্গল এফসি। এ বারের আইএসএল-এ সপ্তম ম্যাচে তারা পেল প্রথম পয়েন্ট। এখানেই শেষ নয়। এ বারের আইএসএল-এ একটা ইতিহাসও সৃষ্টি করে ফেলল তারা। ম্যাচের প্রথমার্ধে একসঙ্গে জোড়া লাল কার্ড দেখল। ম্যাচের শেষ ৭৫ মিনিট তারা খেলল ৯ জনে। তবু এই ৯ জনের ইস্টবেঙ্গলকে কিছুতেই কাবু করতে পারল না মহমেডান স্পোর্টিং।
মহমেডান এসসি-র কাছে এটি কার্যত হারের মতোই। দুর্বল ইস্টবেঙ্গলকে সামনে পেয়েও তাদের রক্ষণে ফাটল ধরাতে পারল না সাদা-কালো ব্রিগেড। সারা ম্যাচে প্রায় ৭৫ শতাংশ বল দখলে রেখেছিল তারা। ১৬ বার গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল আর পাঁচ বার লক্ষ্যে ছিল তাদের শট। তবু এক বারও প্রতিপক্ষের জালে বল জড়াতে পারল না তারা। ওদিকে লাল-হলুদ ব্রিগেডের কাছে এ দিনের পারফরমেন্স কার্যত জয়ের সমান।
শনিবার কলকাতার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত ডার্বি ম্যাচের প্রথম ১৫ মিনিটে মহমেডান এসসি-র আধিপত্যই বেশি ছিল। দু’ বার গোলের সুযোগও পেয়েছিল। ইস্টবেঙ্গলের পেনাল্টি বক্সের ঠিক সামনে থেকে ফ্রি কিকও পেয়েছিল তারা। কিন্তু কোনও সুযোগই কাজে লাগাতে পারেনি।
এর পর থেকে ক্রমশ খেলায় ফেরার চেষ্টা শুরু করে ইস্টবেঙ্গল এবং ২০ মিনিটের মাথায় বক্সের ঠিক বাইরেই ফ্রি কিক আদায় করে নেন দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস। মাদি তালালের ফ্রিকিক বাঁ দিকে ডাইভ দিয়ে অসাধারণ দক্ষতায় বাঁচিয়ে দেন মহমেডানের তরুণ গোলকিপার ভাস্কর রায়।
এর পরই ঘটে ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে এক বড়সড় অঘটন। ২৮ মিনিটের মাথায় মহমেডানের অমরজিৎ সিং কিয়ামের মুখে হাত চালানোয় প্রথমে লাল কার্ড দেখেন নন্দকুমার শেকর। নন্দকুমার লাল কার্ড দেখায় মেজাজ হারিয়ে ফেলেন মহেশ সিং নাওরেম। তিনি রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং তার মাশুল দেন। রেফারি তাঁকেও লাল কার্ড দেখান। আইএসএলের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও দল প্রথমার্ধেই জোড়া লাল কার্ড দেখল।
দুই নির্ভরযোগ্য উইঙ্গারকে হারায় ইস্টবেঙ্গল। এ সময় রক্ষণে মনোনিবেশ করা ছাড়া ইস্টবেঙ্গলের সামনে আর কোনও রাস্তা ছিল না। বার বার আক্রমণে উঠে আসে মহমেডান স্পোর্টিং। প্রথমার্ধের শেষ ১৫ মিনিটে সাত সাতটি কর্নার পায় মহমেডান। কিন্তু একটাও কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই কাণ্ড ঘটে চলে। পরপর সুযোগ তৈরি করেও তা কাজে লাগাতে না পারার নজির গড়ে ফেলে সাদা-কালো বাহিনী। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয়।
এ দিনের খেলার পর লিগ টেবিলে দুই দলের জায়গা অপরিবর্তিত থাকল। ৭ ম্যাচ থেকে ৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে মহমেডান এসসি থাকল দ্বাদশ স্থানে এবং ইস্টবেঙ্গল এফসি ৭ ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট সংগ্রহ করে রইল ত্রয়োদশ তথা শেষ স্থানে।