Home খেলাধুলো ফুটবল আইএসএল ২০২৪-২৫: লিগ-শিল্ডের পরে কাপ এল মোহনবাগানের ঘরে, হার মানলেন সুনীল ছেত্রীরা

আইএসএল ২০২৪-২৫: লিগ-শিল্ডের পরে কাপ এল মোহনবাগানের ঘরে, হার মানলেন সুনীল ছেত্রীরা

আইএসএল-এর মঞ্চে কাপজয়ী সবুজ-মেরুন। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট: ২ (জেসন কামিংস, জেমি ম্যাকলারেন)

বেঙ্গালুরু এফসি: ১ (আলবার্তো রদরিগুয়েজ আত্মঘাতী)  

কলকাতা: গত বছরের আপশোশটা দূর হল। আইএসএল লিগ-শিল্ড জেতার পরে আইএসএল কাপও জিতল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। শনিবার কলকাতার সল্ট লেকে বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত আইএসএল প্লে অফের ফাইনাল ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি-কে ২-১ গোলে হারাল তারা।

গত বারও আইএসএল লিগ-শিল্ড জিতেছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। কিন্তু নক আউট ফাইনালে তারা ১-৩ গোলে হেরে যায় মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে। সবুজ-মেরুন সমর্থকরা হতাশায় ভেঙে পড়েন। সেই স্মৃতি এবারেও সংশয় সৃষ্টি করেছিল সমর্থকদের মনে – তীরে এসে তরী ডুববে না তো? অবশেষে সবুজ-মেরুনের জয় সুনিশ্চিত হতেই উল্লাসে ফেটে পড়ল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন।

কাপ হাতে সস্ত্রীক হোসে মোলিনা (বাঁ দিকে) এবং অধিনায়ক শুভাশিস বোস এবং মালিক সঞ্জীব গোয়েনকা। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

ইতিহাস গড়ল হোসে মোলিনার দল। আইএসএল-এর ইতিহাসে প্রথম দ্বিমুকুট জিতল তারা। দেড় মাস আগেই লিগ-শিল্ড জিতে নিয়েছিল। এ বার প্লে অফের চ্যালেঞ্জ জিতে আইএসএল কাপও জিতে নিল সবুজ-মেরুন বাহিনী। ভারতীয় ফুটবলে তৈরি হল এক নতুন ঐতিহাসিক মাইলফলক।

ম্যাচের প্রথম ২টি গোল আসে দ্বিতীয়ার্ধে এবং জয়সূচক গোলটি আসে অতিরিক্ত সময়ে। ৪৯ মিনিটের মাথায় মোহনবাগানের আলবার্তো রদরিগুয়েজের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় বেঙ্গালুরু। মোহনবাগান ম্যাচে সমতা ফেরায় ৭২ মিনিটে। গোল আসে জেসন কামিংস-এর পা থেকে। নির্ধারিত সময়ে খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকার পর ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে তার ৬ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন জেমি ম্যাকলারেন।

কাপে চুমু খাচ্ছেন মোহনবাগানের দুই বিদেশি ফুটবলার — দিমিত্রি পেত্রাতোস ও জেসন কামিংস। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

কী ভাবে এল দ্বিতীয়ার্ধের দুটি গোল

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল করার সহজ সুযোগ পান মনবীর সিং। বাঁ দিক থেকে জেসন কামিংসের ভাসানো ক্রসে হেড করেন মনবীর। কিন্তু তা অল্পের জন্য বেঙ্গালুরুর পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। পালটা আক্রমণে উঠে আসে বেঙ্গালুরু। ডান দিক থেকে রায়ান উইলিয়ামসের ক্রস বাইলাইনের বাইরে পাঠাতে গিয়ে নিজের গোলের দিকেই পাঠিয়ে দেন আলবার্তো রদরিগুয়েজ। মোহনবাগান গোলকিপার বিশাল কায়েথ এর জন্য প্রস্তুতই ছিলেন না। তিনি বল আটকানোর সময়ই পাননি। রদরিগুয়েজের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় বেঙ্গালুরু।  

০-১ গোলে পিছিয়ে গিয়ে ম্যাচে সমতা আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে মশালবাহিনী। ৮ মিনিট পরে সুযোগও পান কামিংস। বেঙ্গালুরুর বক্সের বাইরে থেকে বল বাড়ান শুভাশিস। সেই বল বক্সের মাথায় পান কামিংস। তার পর বেঙ্গালুরুর গোলের দিকে সোজা ঘুরে গিয়ে শট নেন। কিন্তু তা অনবদ্য সেভ করেন প্রতিপক্ষের গোলকিপার গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু।

প্রথম গোল এল জেসন কামিংস-এর পা থেকে। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

এর কিছুক্ষণ পরেই পেনাল্টি থেকে ম্যাচে সমতা ফেরায় মোহনবাগান। ৭০ মিনিটের মাথায় কামিংসের কাছ থেকে ক্রস পেয়ে বক্সের ঠিক মাথা থেকে প্রতিপক্ষের গোল লক্ষ্য করে যে শট নেন জেমি ম্যাকলারেন তা আটকাতে গিয়ে হাতে লাগিয়ে ফেলেন চিঙলেনসানা সিংহ। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে দ্বিধা করেননি। ৭২ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি শটে গোল করে ফলাফল ১-১ করেন কামিংস (১-১)।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর চার মিনিট সংযুক্তি সময় দেওয়া হয়। কিন্তু ফল ১-১-ই থাকে। এর পরই ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।  

জয়সূচক গোল অতিরিক্ত সময়ের ছয় মিনিটে

অতিরিক্ত সময়ের ছয় মিনিটের মাথায় মোহনবাগানকে এগিয়ে দিলেন জেমি ম্যাকলারেন। প্রতিপক্ষের বক্সের ডান দিকের কোণ থেকে বক্সের মাঝখানে বল বাড়ান গ্রেগ স্টুয়ার্ট। বেঙ্গালুরুর ডিফেন্ডার চিংলেনসানা সিংহের ভুল থেকে বল পেয়ে যান জেমি ম্যাকলারেন। বল পেয়ে প্রায় ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে সরাসরি বেঙ্গালুরুর গোলে শট নেন ম্যাকলারেন। এ বার আর তাঁর শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ২-১ গোলে।

জয়সূচক গোল দিয়ে নায়ক জেমি ম্যাকলারেন। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

এই গোলের পরে অবশ্য ম্যাকলারেনকে আর বেশিক্ষণ মাঠে রাখেননি মোলিনা। আরও মিনিট ছয়েক যেতে ম্যাকলারেনের বদলে দিমিত্রিয়স পেত্রাতোসকে নামানো হয়। মোলিনার লক্ষ্য ছিল আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়ে আরও গোল করে জয় সুনিশ্চিত করা।

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই মোহনবাগানের বক্সের সামনে ফ্রি কিক পায় বেঙ্গালুরু। কিন্তু ফ্রি কিক থেকে সুনীল ছেত্রীর শট সোজা বারের উপর দিয়ে চলে যায়। এর পরে বেঙ্গালুরু আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকে সমতা আনার, কিন্তু মশালবাহিনীর ডিফেন্ডাররা সুনীলদের গোলের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেননি।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version