মোহনবাগান এসজি: ৩ (জেমি ম্যাকলারেন, শুভাশিস বোস, গ্রেগ স্টুয়ার্ট)
মহমেডান স্পোর্টিং এসসি: ০
কলকাতা: দুর্দান্ত চমক দিলেন খোসে মোলিনা। শনিবার প্রথম এগারোয় চারটি পরিবর্তন করেন তিনি। এঁদের মধ্যে ছিলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস আর জেসন কামিংস। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে পেত্রাতোসকে নামালেও কামিংসকে আজ খেলালেনই না। মনবীর সিং আর জেমি ম্যাকলারেনকে সামনে রেখে ৪-৪-১-১ ছকে নিজের দলকে খেলিয়ে ইতিবাচক ফলও পেলেন। মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট ৩-০ গোলে মহমেডান স্পোর্টিং এসসিকে হারিয়ে এবারের আইএসএল-এ আবার জয়ে ফিরল।
গ্রেগ স্টুয়ার্ট ও ম্যাকলারেনের বোঝাপড়ায় এদিন মোহনবাগানের আক্রমণে আমূল পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। সল্ট লেকের বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত ম্যাচে সবুজ-মেরুন বাহিনী কতটা দাপট দেখিয়েছে তা ম্যাচের পরিসংখ্যানে চোখ বোলালেই বোঝা যায়। এদিন সারা ম্যাচে মোহনবাগান ১২টি শট গোলে রেখেছিল, সেখানে মহমেডান গোলে রাখতে পেরেছিল মাত্র ১টি শট। মোহনবাগান যেখানে ১৮টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল, সেখানে মহমেডান স্পোর্টিং সাতটির বেশি গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দেয় কতটা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে মোলিনার দল।

গোল করার পরে ম্যাকলারেনের ভঙ্গি। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।
প্রথমার্ধেই ৩টি গোল
তবে এদিন মোহনবাগানের ৩টি গোলই আসে প্রথমার্ধে। ম্যাচের ৮ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল পায় তারা। এই গোল আসে ম্যাকলারেন ও স্টুয়ার্টের দুর্দান্ত বোঝাপড়া থেকে। লালেংমাউইয়া রালতে ওরফে আপুইয়ার একটি দূরপাল্লার শট কর্নারের বিনিময়ে বাঁচান মহমেডানের গোলকিপার পদম ছেত্রী। লিস্টন কোলাসোর কর্নার শটে হেড দিয়ে ফ্লিক করে ম্যাকলারেনের কাছে পাঠান স্টুয়ার্ট। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপার ম্যাকলারেন তাতে দুর্দান্ত হেড করে বল মহমেডানের জালে জড়িয়ে দিতে কোনো ভুলচুক করেননি।
এদিন মোহনবাগানের রক্ষণভাগ ভালোই খেলেছে। মহমেডানের আক্রমণভাগের দুই লাতিন ফুটবলার অ্যালেক্সি গোমেজ ও রবার্তো ফ্রাঙ্কাকে আটকানোর দায়িত্ব ছিল মোহনবাগানের দুই বিদেশি স্টপার আলবার্তো রডরিগুয়েজ ও টম অ্যালড্রেডের উপর। তাঁরা সে দায়িত্ব ভালোই পালন করেছেন। সবুজ-মেরুন বাহিনীর আরও দুই ডিফেন্ডার শুভাশিস বোস আর আশিস রাই প্রায়ই ওভারল্যাপে উঠে আক্রমণে সঙ্গ দিচ্ছিলেন। এভাবেই আক্রমণে উঠে এসে ম্যাচের ৩১ মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে গেলেন অধিনায়ক শুভাশিস। বাঁদিকের উইং থেকে নেওয়া স্টুয়ার্টের নিখুঁত উড়ন্ত ফ্রিকিকে হেড দিয়ে গোল করেন শুভাশিস। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।
জেতার পরে দলের অধিনায়ক শুভাশিস বোস (ডানদিকে), গ্রেগ স্টুয়ার্ট (মাঝে) এবং আলবার্তো রডরিগুয়েজ (পিছনে)। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।
৫ মিনিট পরেই আবার গোল। শুভাশিসের কাছ থেকে বল পেয়ে যান গ্রেগ স্টুয়ার্ট। তারপর মহমেডানের তিন ডিফেন্ডারকে অসাধারণ ড্রিবল করে কাটিয়ে বক্সের বাইরে থেকে বাঁপায়ে যে শট নেন তা বাঁচাতে পারেননি পদম।
মোহনবাগান উঠে এল চতুর্থ স্থানে
প্রথমার্ধে ৩টি গোল করার পর দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগানের আক্রমণে ধার কিছুটা কমে যায়। মহমেডানও কিছুটা লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা করে। তবে কাজের কাজ কিছু হয়নি।
এদিনের জয়ের পর ৪টি ম্যাচ থেকে ৭ পয়েন্ট সংগ্রহ করে মোহনবাগান উঠে এল লিগ টেবিলের চতুর্থ স্থানে। আর সমসংখ্যক খেলায় ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে মহমেডান নেমে গেল ১০ নম্বর স্থানে। বাগানের পরবর্তী খেলা ১৯ অক্টোবর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে।