মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ৩ (কামিংস, মনবীর, আনোয়ার) মুম্বই সিটি এফসি (দিয়াস)
খবরঅনলাইন ডেস্ক: বদনাম ঘোচাল মোহনবাগান। মুম্বই সিটি এফসি-কে কখনও হারাতে না-পারার বদনাম। প্রথম বার মোহনবাগান হারাল মুম্বইকে। ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে উঠল মোহনবাগান।
রবিবার বিবেকানন্দ যুবভারতী স্টেডিয়ামে আয়োজিত কোয়ার্টার ফাইনালের খেলায় মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিল মুম্বই সিটি এফসি-কে। সবুজ-মেরুনের হয়ে গোল করেন জেসন কামিংস, মনবীর সিংহ এবং আনোয়ার আলি। মুম্বইয়ের একমাত্র গোলদাতা হর্হে পেরেরা দিয়াস। সেমিফাইনালে মোহনবাগান মুখোমুখি হবে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে। খেলা হবে ৩১ আগস্ট, বৃহস্পতিবার।
প্রথমার্ধে মোহনবাগান ২-১
খেলা শুরুর ন’ মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যায় মোহনবাগান। ম্যাচের সাত মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় তারা। মুম্বইয়ের বক্সে বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন জেসন কামিংস। তাঁকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন মুম্বইয়ের গোলকিপার ফুর্বা লাচেনপা। অবৈধ ভাবে বাধা দেওয়ার খেসারত স্বরূপ পেনাল্টি দিতে একটুকুও সময় নেননি রেফারি। আর পেনাল্টি থেকে গোল করতে কোনো ভুলচুক করেননি অস্ট্রেলিয়ার স্ট্রাইকার কামিংস। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। মোহনবাগানের হয়ে তিনটি গোল হয়ে গেল কামিংস-এর।
গোল খেয়ে মুম্বই সিটি এফসি তেড়েফুঁড়ে ওঠে। এবং তার ফলও মেলে ম্যাচের ২৮ মিনিটে। তবে এই গোল খাওয়ার জন্য দায়ী মোহনবাগান রক্ষণ। বাঁ দিকে নিজেদের মধ্যে পাস খেলছিলেন মুম্বইয়ের গ্রেগ স্টুয়ার্ট এবং অ্যালবার্ট নগুয়েরা। খেলতে খেলতে বক্সের মাঝামাঝি ক্রস ভাসিয়ে দেন নগুয়েরা। মোহনবাগানের গোলকিপার বিশাল কাইথ হাত লাগিয়েও বল ধরতে পারেননি। বল চলে যায় দিয়াসের কাছে। তিনি বুক দিয়ে ঠেলে বল জড়িয়ে দেন মোহনবাগানের জালে।
কিন্তু ম্যাচ সমান সমান থাকে মাত্র দু’ মিনিট। গোল খেয়েই আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে মোহনবাগান। কর্নার পেয়ে যায় তারা। মুম্বইয়ের রক্ষণ কর্নার কিক ক্লিয়ার করলেও বল চলে যায় মোহনবাগানের হুগো বুমোসের কাছে। তিনি বলটি মুম্বইয়ের রক্ষণে ভাসিয়ে দিলে তাতে হেড করে গোল করে দেন অরক্ষিত মনবীর। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ২-১ গোলে। এর পরও মোহনবাগান প্রথমার্ধে কিছু সুযোগ পেয়েছিল, তবে তা কোনো কাজে আসেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে একমাত্র গোল মোহনবাগানের
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণে খেলা জমে ওঠে। খেলায় ফের সমতা আনার জন্য মরিয়া হয়ে মুম্বই। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে গোল শোধ করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল মুম্বই। কিন্তু গ্রেগ স্টুয়ার্টের শট অল্পের জন্যে দূরের পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
পরের মিনিটেই পেনাল্টির আবেদন করে মুম্বই। স্টুয়ার্টকে পিছন থেকে ট্যাকল করেন আনোয়ার আলি। বক্সের মধ্যে পড়ে যান স্টুয়ার্ট। মুম্বইয়ের আবেদনে কান দেননি রেফারি। এ নিয়ে রাগ দেখানোয় স্টুয়ার্টই হলুদ কার্ড দেখেন।
৫৮ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগ মিস করে মোহনবাগান। মুম্বইয়ের বিক্রম প্রতাপ সিংয়ের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে কেরলের ফুটবলার আশিক কুরুনিয়ান তা পাঠিয়ে দেন সাদিকুর কাছে। সামনে ফাঁকা গোল পেয়েও বল বারের উপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন সাদিকু।
এর পাঁচ মিনিট পরেই গোল পেয়ে যায় মোহনবাগান। মুম্বইয়ের ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে মুম্বইয়ের বক্সে ক্রস বাড়ান আশিক। পুরোপুরি ফাঁকায় দাঁড়িয়েছিলেন আনোয়ার। নিখুঁত হেডে গোলকিপারকে পরাস্ত করেন তিনি।
এর পরেও খেলা চলে ৩৫ মিনিট। গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালালেও কাজের কাজ করতে পারেনি মুম্বই সিটি এফসি। বরং ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল সবুজ-মেরুন। কিন্তু সেই সুযোগ নষ্ট করে তারা, বিশেষ করে সাদিকু ও মনবীর।