ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ক্রীড়া সম্পর্ক। এর প্রভাব পড়েছে আসন্ন এশিয়া কাপ ইয়ুথ স্ক্রাবল চ্যাম্পিয়নশিপে। ভারতীয় হাই কমিশন অধিকাংশ পাকিস্তানি খেলোয়াড়কে ভিসা দিতে অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানি খেলোয়াড়রা অবশ্য দু’মাস আগেই ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন, কিন্তু প্রক্রিয়াটি দীর্ঘায়িত হয় এবং অবশেষে ভারতীয় হাই কমিশন জানিয়ে দেয় যে তাঁদের ভিসা দেওয়া হবে না।
পাকিস্তান স্ক্রাবল অ্যাসোসিয়েশনের (PSA) ডিরেক্টর তারিক পারভেজ ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, “অর্ধেক খেলোয়াড়কে বিনা ব্যাখ্যায় ভিসা দেওয়া হয়নি, যদিও এঁদের অনেকেই গত বছর ভারতে প্রতিযোগিতা করে জয়লাভ করেছে।” পাকিস্তানের দলটি বিশ্ব যুব স্ক্রাবল চ্যাম্পিয়ন ও এশিয়ান যুব শিরোপার বর্তমান অধিকারী হওয়ায় তাদের অনুপস্থিতি টুর্নামেন্টে বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারত ও পাকিস্তানের ক্রীড়া সম্পর্কে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে সাম্প্রতিক বেশ কিছু ইস্যু। যার মধ্যে সবচেয়ে বড় হল আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে ভারতের অনাগ্রহ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI) ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা পাকিস্তানে নিজেদের ওয়ানডে দল পাঠাবে না। বিসিসিআই একটি “হাইব্রিড” ফর্ম্যাটের প্রস্তাব দিয়েছে, তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB) এই বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৯ তারিখ থেকে শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মূল আয়োজক পাকিস্তান। এই টুর্নামেন্টের জন্য পাকিস্তানে তিনটি ভেন্যুতে খেলা হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে বিসিসিআই তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়ে বলেছে যে, ভারতের জাতীয় দল পাকিস্তানে যাবে না। ভারতের সরকারের পরামর্শ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এমন সিদ্ধান্তের পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এবং আইসিসি-কে বিকল্প পরিকল্পনা করতে হবে। বলে রাখা ভালো, ২০২৩ সালের এশিয়া কাপও একটি “হাইব্রিড মডেল”-এ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা যৌথ ভাবে আয়োজন করেছিল। কারণ বিসিসিআই তখনও পাকিস্তানে দল পাঠাতে রাজি ছিল না।
বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে, বিসিসিআই তাদের এই সিদ্ধান্তটি মৌখিক ভাবে আইসিসিকে জানিয়েছে, তবে এখনও লিখিত কোনো ঘোষণা করা হয়নি। আইসিসি হয়তো লিখিত রূপে এই তথ্যটি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
এমনই সব ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের ক্রীড়া কূটনীতি ও সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও তীব্র হচ্ছে বলেই অনুমান ওয়াকিবহাল মহলের।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাবে না ভারত, আইসিসি-কে জানাল বিসিসিআই