বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারির অনুরোধ। ইন্টারপোলকে এই অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল (আইসিটি)। এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। এবার আইসিটি-র তরফে এই পদক্ষেপ নেওয়া হল। এর উদ্দেশ্য হাসিনাকে গ্রেফতার করা।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র খবর অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আইসিটির প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মঙ্গলবার জানিয়েছেন, গত রবিবার ইন্টারপোলের কাছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নোটিস জারির অনুরোধ করা হয়েছে।
মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কথায়, “শেখ হাসিনা মানবতা-বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত এবং তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। যেহেতু তিনি বাংলাদেশের জুরিসডিকশনের বাইরে চলে গিয়েছেন, তাই ইন্টারপোলকে রেড অ্যালার্ট জারি করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।”
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ‘গণহত্যা এবং মানবতা বিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগে। গত ১৭ অক্টোবর আইসিটি হাসিনা, তাঁর দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদের সহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। এই মামলাগুলি দায়ের করেন নিহত ছাত্র নেতা মেহেদীর বাবা মোহাম্মদ সানাউল্লাহ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্র নেতা আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মোহাম্মদ বুলবুল কবির।
এই মামলাগুলির মধ্যে শুধুমাত্র শেখ হাসিনা নন, তাঁর সরকারের মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ এবং দলটির বিভিন্ন শাখা সংগঠনের কিছু সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পাশাপাশি, আন্দোলনকারীদের খুনের অভিযোগে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জাকির হোসেন সহ চারজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আইসিটি।
প্রসঙ্গত, এর আগেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ‘ফিনানশিয়াল টাইমস’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতের রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে না। তবে, আদালতের রায়ের পরে অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে তাঁকে ফেরানোর চেষ্টা করবে সরকার।