টোকিও: সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্টুডিও ঘিবলি-স্টাইলের AI-নির্মিত প্রতিকৃতি নিয়ে নতুন প্রবণতা দেখা দিয়েছে। তবে এই প্রবণতাই নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে AI এবং শিল্পের সততা নিয়ে। স্টুডিও ঘিবলির সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত অ্যানিমেটর হায়াও মিয়াজাকি এই বিষয়ে কড়া আপত্তি জানিয়ে বলেছেন, AI-নির্মিত শিল্প ‘জীবনের অপমান’।
২০১৬ সালের ভিডিও ক্লিপে তীব্র প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি একটি পুরনো ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় পুনরায় ভাইরাল হয়েছে। ২০১৬ সালে এনএইচকে-র এক তথ্যচিত্রে হায়াও মিয়াজাকি একটি AI-নির্মিত অ্যানিমেশন সিকোয়েন্স দেখে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি জানান, এটি তাঁর এক প্রতিবন্ধী বন্ধুর সংগ্রামকে “অবজ্ঞা” করছে। মিয়াজাকি বলেন, প্রকৃত শিল্পের মূল উৎস মানুষের আবেগ এবং হস্তশিল্প, যেখানে AI-নির্মিত বিষয়বস্তু তাঁর কাজের কোনো স্থান পায় না।
মানবিক সৃষ্টিশীলতার প্রশ্নে বিতর্ক
মিয়াজাকির এই বক্তব্যের পর থেকে AI-নির্মিত শিল্পের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে শিল্প মহলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। অনেকের মতে, AI হয়তো মুহূর্তে দৃষ্টিনন্দন চিত্র তৈরি করতে পারে, তবে শিল্পের আসল সৌন্দর্য—তার গভীরতা, উদ্দেশ্য এবং মানবিক সংযোগ—AI-এর মাধ্যমে সম্ভব নয়।
AI-নির্মিত ঘিবলি-স্টাইলের প্রতিকৃতি
নতুন AI ট্রেন্ডে ব্যবহারকারীরা সহজেই ঘিবলি-স্টাইলের প্রতিকৃতি তৈরি করতে পারছেন। তবে সমালোচকদের দাবি, AI কেবল দৃষ্টিনন্দন রূপ নকল করতে পারে, কিন্তু ঐতিহ্যবাহী অ্যানিমেশনের অন্তর্নিহিত প্রাণ এবং গভীরতা তুলে ধরতে ব্যর্থ।
মিয়াজাকির অটল অবস্থান
AI প্রযুক্তির প্রসারের মাঝেও মিয়াজাকির মন্তব্যে স্পষ্ট যে, তিনি মানবিক সৃষ্টিশীলতার গুণমানকে অক্ষুণ্ণ রাখতে চান। অ্যানিমেশন শিল্পের একজন দূরদর্শী হিসেবে তাঁর এই অবস্থান শিল্পকলার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
শিল্প বনাম প্রযুক্তি
মিয়াজাকি মনে করেন, শিল্প এমন এক মাধ্যম যা মানুষের আবেগ ও অভিজ্ঞতা থেকে আসে। তিনি বলেন, “মানবতার যন্ত্রণা ও সংগ্রামকে উপেক্ষা করে তৈরি করা যন্ত্র-নির্ভর চিত্র কোনোভাবেই সত্যিকারের শিল্প নয়।”
এই মন্তব্যকে ঘিরে শিল্পী ও প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। অনেকেই মিয়াজাকির সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন যে প্রযুক্তির বিকাশকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা উচিত।