Home প্রযুক্তি ভারতের সর্বাধুনিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, এলন মাস্কের বড় পদক্ষেপ

ভারতের সর্বাধুনিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, এলন মাস্কের বড় পদক্ষেপ

0

ভারতের সর্বাধুনিক যোগাযোগ স্যাটেলাইট জিস্যাট-এন২ (GSAT-N2) আগামী সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে উৎক্ষেপিত হতে চলেছে। স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেটের মাধ্যমে এই স্যাটেলাইটকে মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক, কারণ ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) প্রথম বারের মতো এলন মাস্কের স্পেসএক্সের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় কাজ করছে।

ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও এলন মাস্কের ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক এই উৎক্ষেপণকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই চুক্তি আমেরিকার নির্বাচন ফলাফলের আগেই সম্পন্ন হয়েছিল, তাই “প্রভাবিত পুঁজি” নিয়ে সমালোচনার সুযোগ নেই।

ভারী স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য বিদেশি রকেটের ওপর নির্ভর করা ছাড়া বিকল্প ছিল না ভারতের। জিস্যাট-এন২-এর ওজন ৪,৭০০ কেজি, যা ভারতের নিজস্ব রকেট এলভিএম-৩ বা “বাহুবলী”-এর ক্ষমতার বাইরে। বাহুবলী সর্বাধিক ৪,০০০-৪,১০০ কেজি পর্যন্ত পে লোড বহন করতে পারে।

ভারত দীর্ঘদিন ধরে আরিয়ানস্পেসের রকেট ব্যবহার করলেও বর্তমানে এই সংস্থা কোনও কার্যকর রকেট সরবরাহ করতে পারছে না। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে তাদের রকেটও বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তাই, স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেটই হয়ে উঠেছে ভারতের একমাত্র কার্যকর বিকল্প।

নিউ স্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেডের (NSIL) চেয়ারম্যান রাধাকৃষ্ণণ দুরাইরাজ জানিয়েছেন, “এই উৎক্ষেপণের জন্য আমরা অত্যন্ত লাভজনক একটি চুক্তি করেছি। প্রযুক্তিগত সামঞ্জস্য এবং বাণিজ্যিক শর্তাবলির দিক থেকে এটি আমাদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত।”

জিস্যাট-এন২ স্যাটেলাইটটি ৩২টি ব্যবহারকারী বিম এবং ১৪ বছরের মিশন লাইফ সহ ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল এবং বাকি অংশে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধা প্রদান করবে। এমনকি এটি বিমানের মধ্যেও ইন্টারনেট সংযোগ সক্ষম করবে।

এলন মাস্ক সম্প্রতি ভারতের প্রতি তার উৎসাহ প্রকাশ করে বলেন, “ভারত বড় দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময়। প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে ভারত ভবিষ্যতে বিশাল অগ্রগতি করবে।” তিনি স্পেসএক্সের স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট পরিষেবা ভারতের গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারেও আগ্রহ দেখিয়েছেন।

তবে, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে স্টারলিঙ্ক পরিষেবা শুরু করার আগে নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়মাবলি মেনে চলতে হবে। টেলিকম মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, “তারা যাবতীয় শর্ত পূরণ করার পরই আমরা তাদের লাইসেন্স দেব।”

ভারত স্পেসএক্সের সঙ্গে আরও একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করেছে। যার মাধ্যমে একজন ভারতীয় মহাকাশচারীরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাবেন। এই মিশনের জন্য প্রায় ৬ কোটি ডলার খরচ হবে।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, স্পেসএক্সের এই উৎক্ষেপণ এবং ভবিষ্যৎ মিশন ভারতের মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। যা দেশের বাণিজ্যিক মহাকাশ প্রকল্পগুলিকে বিশ্বমানের উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version