ভ্রমণ হোক নিরাপদ, আনন্দময়—তাই এবার পুজো ও শীতে পশ্চিম নয়, পূর্বেই মন দিচ্ছেন পর্যটকরা। ট্র্যাভেল এজেন্ট ও ট্যুর অপারেটরদের পরামর্শ, বর্তমান আন্তর্জাতিক উত্তেজনার আবহে ইউরোপ কিংবা আমেরিকার সফর আপাতত এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যের দোহা, দুবাই ও আবু ধাবির বিমানবন্দরে শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় প্রায় ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা ধরে শত শত যাত্রী আটকে ছিলেন। ইরান-আমেরিকা সংঘাতের জেরে কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে মিসাইল হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের আকাশপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সঙ্কট দেখা দেয়। কলকাতা থেকে সরাসরি ইউরোপ বা আমেরিকার ফ্লাইট না থাকায় মধ্যপ্রাচ্যের সংযোগকারী ফ্লাইটগুলিই ছিল সবচেয়ে ভরসাযোগ্য। কিন্তু এবার পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে।
ট্র্যাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অনিল পঞ্জাবি বলেন, “যদি ক্লায়েন্ট বিশেষভাবে অনুরোধ না করেন, তাহলে আমি ইউরোপ বা আমেরিকার পরিবর্তে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, জাপান-কোরিয়া কিংবা অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ভ্রমণের পরামর্শই দেব। এই অঞ্চলেও দেখার অনেক কিছু রয়েছে। যদিও ফ্লাইট স্বাভাবিক হয়েছে, তবুও ইজরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত এবং ইরান-যুক্তরাষ্ট্র টানাপোড়েন আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে।”
একই কথা জানাচ্ছেন ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সদস্য মানব সোনি। তিনি বলেন, “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির ভিসা ছাড় এবং তুলনামূলকভাবে কম খরচে ভ্রমণ করা যায়। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল—নিরাপত্তা। ব্যবসার কাজে কিংবা আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে ঝুঁকি নেওয়া যায়, কিন্তু পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়ে কেউ অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে চান না।”
চলতি বছর অক্টোবরে শুরু হওয়া ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধ এবং জুনে ইরান ও আমেরিকার সংঘাত বহু পর্যটকের মনে আশঙ্কা তৈরি করেছে। তার উপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও স্থিতাবস্থা ফেরেনি। এমন পরিস্থিতিতে উৎসবের ছুটিতে শান্তিপূর্ণ গন্তব্যকেই বেছে নিচ্ছেন অনেকেই।
পঞ্জাবি আরও জানান, “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যেসব দেশে এখনও ভিসার প্রয়োজন হয়, সেখানেও এখন খুব দ্রুত ভিসা প্রসেস হয়ে যাচ্ছে।”
সাম্প্রতিক ট্রেন্ড অনুযায়ী, ১০ জন পর্যটকের মধ্যে ৭ জনই এবার পশ্চিমে নয়, পূর্বেই যেতে আগ্রহী। নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও ভিসা-বান্ধব এই গন্তব্যগুলিই হয়ে উঠছে নতুন পছন্দ।
ভ্রমণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন, গাইড, ঘোরাঘুরি নিয়ে লেখা পড়ুন ভ্রমণ অনলাইনে


