কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া সব হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার সন্ধ্যায় টেলিভিশন ও বেতারের মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে দেওয়া সরাসরি ভাষণে তিনি এই ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমি দ্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, এরা যেই হোক না কেন, উপযুক্ত শাস্তি পায়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “হত্যাকাণ্ডসহ যে সকল অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু বিচারের ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে সে সকল বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। কাদের উস্কানিতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলো, কারা কোন উদ্দেশ্যে দেশকে একটি অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিল, তা তদন্ত করে বের করা হবে।”
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংঘর্ষে রূপ নেওয়া ও হতাহতের ঘটনাগুলোর বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “দুঃখের বিষয় হলো এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তাদের উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার জন্য বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। যেহেতু বিষয়টি উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে তাই সকলকে ধৈর্য ধরতে আহ্বান জানাচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, “অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো কিছু মহল এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে অনাকাঙ্খিত উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এর ফলে, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যে সকল ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনে মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, “পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যে সকল ঘটনাগুলো ঘটেছে তা কখনই কাম্য ছিল না।”
তিনি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে নিচে ছুঁড়ে ফেলে, অনেক ছাত্রদের হাত পায়ের রগ কেটে দেয়, তাদের উপর লাঠিপেটা এবং ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে। ঢাকা, রংপুর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবন ও ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হলে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, সাধারণ পথচারী, দোকানীদের আক্রমণ, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে বাধা প্রদান এবং মেয়েদের হলে ছাত্রীদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। শিক্ষকদের উপর চড়াও হয়ে তাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে।


