সীমান্তে তুরস্কের তৈরি ড্রোন মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ। প্রতিবেশী দেশের এই পদক্ষেপে সীমান্ত অঞ্চলে নজরদারি বাড়িয়েছে ভারত। শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পর সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাওয়ার গোয়েন্দা তথ্যের প্রেক্ষিতেই এই সতর্কতা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৭তম ইউনিট সীমান্ত এলাকায় Bayraktar TB2 নামের ড্রোন মোতায়েন করেছে। এই ড্রোনগুলো মূলত গোয়েন্দা, নজরদারি এবং তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশ দাবি করেছে, এই ড্রোনগুলো প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে ভারত এই সংবেদনশীল অঞ্চলে উন্নত ড্রোন মোতায়েনের কৌশলগত গুরুত্বকে অবহেলা করছে না।
গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার শাসনকালে দমিয়ে রাখা উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলি এখন সীমান্ত এলাকায় ফের সক্রিয় হচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিয়ে এই গোষ্ঠী এবং চোরাচালান চক্রগুলি ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। এক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “হাসিনার অপসারণের পর থেকে সীমান্ত অঞ্চলে ভারত-বিরোধী কার্যকলাপ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে উন্নত ড্রোন মোতায়েন ভারতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।”
তুরস্ক থেকে আনা Bayraktar TB2 ড্রোনগুলো চলতি বছরের শুরুতে সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। এর ১২টির মধ্যে ৬টি বর্তমানে কার্যকর রয়েছে। এই ড্রোনগুলোর মাধ্যমে নজরদারি এবং হালকা স্ট্রাইক অপারেশন পরিচালনা করা সম্ভব। বাংলাদেশ ডিফেন্স টেকনোলজির (ডিটিবি) তথ্য অনুযায়ী, এই ড্রোনগুলি সীমান্ত অঞ্চলে তাদের কার্যক্ষমতা বাড়িয়েছে।
ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এই নতুন ড্রোন মোতায়েনের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সীমান্ত অঞ্চলে Heron TP-র মতো উন্নত ড্রোন মোতায়েন এবং পাল্টা-ড্রোন কার্যক্রম জোরদার করার পরিকল্পনা রয়েছে। এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, “আমরা পরিস্থিতি নিরবচ্ছিন্ন ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”
এছাড়াও, ভারত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ এবং ড্রোন মোতায়েনের এই নতুন পরিস্থিতি ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিংসার অভিযোগে মহম্মদ ইউনূসের নোবেল পুনর্বিবেচনার দাবি পুরুলিয়ার সাংসদের