কলকাতা: আনন্দনগরীর বড়দিন যে সত্যিই একটা দর্শনীয় উৎসব, তা আর একবার প্রমাণ করল মহানগরী। ভারতের আর কোনো শহরে বড়দিন এত জাঁকজমকের মধ্যে দিয়ে পালিত হয় কি না সন্দেহ। এখন নিঃসন্দেহে বলা যায়, আনন্দ-উচ্ছ্বাসের নিরিখে দুর্গাপুজোর পরেই মহানগরীতে স্থান বড়দিনের। এ দিন জনতার বাঁধ ভেঙেছে সারা শহর জুড়ে।
এ দিন নানা সাজে সেজেছে মহানগরী। আলোকমালায় আলোকিত শহরের বিভিন্ন প্রান্ত। শীতের দাপট তেমন নেই। সেই সুযোগে সকাল থেকেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছেন মানুষ। শুধু কলকাতার বাসিন্দাই নন, এ দিন শহরে ভিড় করেছেন মফস্সলের মানুষও। চলে এসেছেন ট্রেনে-বাসে-মেট্রোয়। সোমবার থেকে কার্যত সব মেট্রো চলছে দক্ষিণেশ্বর থেকে সাত মিনিট অন্তর। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এ বার শহরতলির মানুষের ভিড় বেড়েছে। হুগলির মানুষ মেট্রো ধরেছেন দক্ষিণেশ্বর থেকে, উত্তর ২৪ পরগণার মানুষ বরাহনগর থেকে আর দক্ষিণের মানুষ কবি সুভাষ থেকে। ফলে সারা দিন মেট্রোয় ভিড়। এ ছাড়া ট্রেন-বাস-ট্যাক্সি আর নিজেদের গাড়ি তো আছেই। আর শুধু কলকাতা বা তার আশেপাশের মানুষজনই নন, বড়দিনের কলকাতা উপভোগ করতে প্রচুর মানুষ এসেছেন রাজ্যের বাইরে থেকেও।
কেউ চলছেন চিড়িয়াখানায়। কারও গন্তব্য আবার ইকো পার্ক। কেউ বা নিকো পার্কে, বা সায়েন্স সিটিতে। আর জাদুঘর, ভিক্টোরিয়া তো আছেই। এক একটা দর্শনীয় স্থান ভিড়ের হিসেবে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

এ বছরও ভিড়ের লড়াইয়ে জোর টক্কর দিয়েছে চিড়িয়াখানা আর ইকো পার্ক। গুনতির হিসাবে চিড়িয়াখানা এগিয়ে থাকলেও খুব একটা পিছিয়ে ছিল না ইকো পার্কও।

ইকো পার্কে সাধারণ মানুষ যেন ছিলেন পিকনিকের মুডে। দেদার ঘুরে বেড়িয়েছেন। খাওয়াদাওয়া করেছেন। জলাশয়ে নৌকা ভ্রমণ করেছেন।

ইকো পার্কে রয়েছে সপ্তম আশ্চর্য দর্শন। আগরার তাজমহল দেখা না হলে কী হবে, ইকো পার্ক তো আছে। দুধের স্বাদ তো ঘোলে মেটানো যায়।

আর কোথাও যাক বা না-ই যাক, ময়দান আর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল তো আছে। রোজ যে দৃশ্য দেখা যায় না, তা-ই বড়দিনে দেখা গেল ভিক্টোরিয়ায়। সেখানে ঢোকার জন্য মূল ফটকে লাইন পড়েছে।

এরই মধ্যে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চে মোমবাতি জ্বালিয়ে যিশুর উদ্দেশে প্রার্থনা করেছেন ভক্তরা।
ছবি: রাজীব বসু