ঘুষ কাণ্ডে অভিযুক্ত শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আমেরিকায় দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা একসঙ্গে চলবে। শুক্রবার নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে ডিস্ট্রিক্ট জজ নিকোলাস জি গারাফিস এই নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলার বিচারের দায়িত্বও তাঁর হাতে।
অভিযোগের বিস্তারিত
অভিযোগ, আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড (এজিএল) অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রির বরাত পাওয়ার জন্য সরকারি আধিকারিকদের, যাঁদের মধ্যে মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিরাও রয়েছেন, ২৬.৫ কোটি ডলার (প্রায় ২০২৯ কোটি টাকা) ঘুষ দিয়েছে।
মূল অভিযোগ
আমেরিকার ঘুষ বিরোধী আইন ‘ফরেন কোরাপ্ট প্র্যাক্টিসেস অ্যাক্ট’ (এফসিপিএ) লঙ্ঘন।
শেয়ার এবং ঋণপত্র সংক্রান্ত প্রতারণা।
বৈদ্যুতিন যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতারণার ষড়যন্ত্র।
এই সব অভিযোগের ভিত্তিতে আমেরিকার ন্যায়বিচার দফতর (ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস) এবং মার্কেট রেগুলেটর সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) যথাক্রমে ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।
ঘুষ ও প্রতারণার অভিযোগ
২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর এসইসি এবং ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস প্রমাণ-সহ অভিযোগপত্র পেশ করে। সেখানে গৌতম আদানি, তাঁর ভাইপো সাগর আদানি, এবং সংস্থার ডিরেক্টর বিনীত জৈন-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে, তাঁরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রির বরাত পাওয়ার জন্য ঘুষ দিয়েছেন এবং তথ্য গোপন করে আমেরিকার ব্যাঙ্ক ও লগ্নিকারীদের থেকে প্রকল্পের জন্য কোটি কোটি টাকা তুলেছেন।
আদালতের নির্দেশ
নিউ ইয়র্কের আদালত আদানির বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলাগুলি একসঙ্গে শুনানির নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তকারীদের অভিযোগ, এই প্রতারণার মাধ্যমে আদানিরা ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলার (প্রায় ১৬,৯০০ কোটি টাকা) মুনাফার পরিকল্পনা করেছিলেন।
আদানি গোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া
আদানি গোষ্ঠী এই অভিযোগগুলি অস্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, গৌতম ও সাগরের বিরুদ্ধে সরাসরি ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়নি। শুধুমাত্র তথ্য গোপন করে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে, যার শাস্তি সাধারণত জরিমানা।
এই মামলাগুলি আদানি গোষ্ঠীর সুনাম এবং আন্তর্জাতিক কার্যকলাপের ওপর কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।