২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে (Q1 FY26) বন্ধন ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা দাঁড়াল মাত্র ৩৭২ কোটি টাকা। গত বছরের একই ত্রৈমাসিকে এই লাভ ছিল ১,০৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ নিট লাভ কমেছে প্রায় ৬৫ শতাংশ। ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ঋণের মান (Asset Quality) দুর্বল হওয়ায় প্রভূত পরিমাণে সংরক্ষণ (Provisioning) করতে হয়েছে, যার ফলে মুনাফায় বড় ধাক্কা এসেছে।
এই সময়ে ব্যাঙ্কের মোট আয় সামান্য বেড়ে হয়েছে ৬,২০১.৪৯ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় অল্প বেশি (৬,০৮১.৭৩ কোটি টাকা)। তবে নিট সুদ আয় (Net Interest Income বা NII) কমে যাওয়ায় লাভে বড় প্রভাব পড়েছে। পূর্বাঞ্চলে ঋণের পরিশোধে বিঘ্ন এবং মাইক্রোফিনান্স পোর্টফোলিওতে চাপই এই সমস্যার মূল কারণ বলে জানিয়েছে ব্যাঙ্ক।
এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ককে আরও বেশি পরিমাণে provisioning করতে হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে নিট আয়ে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে তারা সংরক্ষণের দৃষ্টিভঙ্গিতে এগোচ্ছে এবং ক্রেডিট ব্যবস্থাপনা এবং আদায়ের মানোন্নয়নে মন দিচ্ছে।
এনপিএ সংক্রান্ত তথ্যও চিন্তার কারণ হতে পারে। প্রথম ত্রৈমাসিকে ব্যাঙ্কের মোট এনপিএ অনুপাত (Gross NPA ratio) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ শতাংশ, যা আগের বছরের তুলনায় (৪.২ শতাংশ) বেশি। নিট এনপিএ (Net NPA) ১.৪ শতাংশে পৌঁছেছে, যা আগের বছরে ছিল ১.১ শতাংশ।
তবে মূলধন পর্যাপ্ততা (Capital Adequacy Ratio) যথেষ্টই ভাল অবস্থানে আছে—১৯.৪ শতাংশ, যা নিয়ন্ত্রক সীমার (১১.৫ শতাংশ) অনেক উপরে।
এই ত্রৈমাসিকে ব্যাঙ্কের মোট সম্পদ ছিল ১,৮৯,৪০৩ কোটি টাকা। সম্পদের উপর রিটার্ন (RoA) ছিল মাত্র ০.২০ শতাংশ।
ব্যবসার দিক থেকে, ব্যাঙ্কের আমানত ১৬ শতাংশ হারে বেড়ে হয়েছে ১.৫৫ লক্ষ কোটি টাকা। রিটেল আমানতের অংশ ৬৮ শতাংশ, যার মধ্যে CASA (কারেন্ট অ্যান্ড সেভিংস অ্যাকাউন্ট) ছিল ৪১,৮৫৮ কোটি টাকা এবং CASA অনুপাত ছিল ২৭.১ শতাংশ। রিটেল টার্ম ডিপোজিটে ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে।
ঋণপ্রদান (Gross Advances) ৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৩৪ লক্ষ কোটি টাকা। ঋণের গঠনে বড় পরিবর্তন এসেছে। নিরাপদ ঋণের (Secured Loans) অংশ এক বছর আগে ৪৩ শতাংশ থাকলেও এবার তা বেড়ে ৫২ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও পার্থ প্রতিম সেনগুপ্ত বলেন, “চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমাদের ব্যবসার ভিত মজবুত এবং দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও গ্রাহক পরিষেবায় গুণমান বজায় রেখে আমরা দীর্ঘমেয়াদি মূল্য দেওয়ার দিকেই মনোযোগী।”