ইজরায়েল সোমবার দাবি করেছে তারা বৈরুতের একটি হাসপাতালের নিচে হিজবুল্লাহর একটি গোপন আর্থিক কেন্দ্র উদ্ধার করেছে। ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (IDF) জানিয়েছে, ওই বাঙ্কারে লক্ষ লক্ষ ডলার এবং সোনা মজুত ছিল, যা সংগঠনের কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত হত।
এই তথ্য প্রকাশের আগে রবিবার রাতে ইজরায়েলি বিমান বাহিনী একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ চালায়, যার মধ্যে হিজবুল্লাহর আর্থিক সম্পদও ছিল। IDF-এর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি টেলিভিশন ব্রিফিংয়ে বলেন, “আজ রাতে আমি এমন একটি স্থানের তথ্য প্রকাশ করছি, যেখানে হিজবুল্লাহর বিপুল সম্পদ রয়েছে। বাঙ্কারটি বৈরুতের আল-সাহেল হাসপাতালের ঠিক নিচে রয়েছে।”
হিজবুল্লাহর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে আঘাত
রবিবার রাতে হিজবুল্লাহ-র সঙ্গে প্রায় ৩০টি জড়িত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে ইজরায়েলি বিমানগুলি। যার মধ্যে আল-কর্দ আল-হাসান (AQAH) নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানও ছিল। যদিও AQAH আনুষ্ঠানিকভাবে একটি দাতব্য সংস্থা হিসাবে নিবন্ধিত, ইজরায়েল এবং আমেরিকার দাবি, এটি হিজবুল্লাহর আর্থিক নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা সংগঠনকে সামরিক উদ্দেশ্যে নগদ অর্থ এবং সোনা সরবরাহ করত।
ইজরায়েলি অভিযানের পরিপ্রেক্ষিত
IDF-এর দাবি অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর তহবিল ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ইজরায়েলের সাম্প্রতিক অভিযান একটি বৃহৎ প্রচেষ্টা। IDF চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি জানিয়েছেন, মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লেবাননে হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠানগুলিতে ৩০০টিরও বেশি আক্রমণ চালানো হয়েছে।
আল-কর্দ আল-হাসান প্রতিষ্ঠানের ১৯৮০-এর দশক থেকে লেবাননে কার্যক্রম চলছে এবং এটি লেবাননের নাগরিকদের স্বর্ণের বিনিময়ে ঋণ প্রদান করে। তবে, মার্কিন ও ইজরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, এই সংস্থা হিজবুল্লাহর আয় লুকিয়ে তার কার্যক্রম চালানোর মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। IDF-এর মুখপাত্র হাগারি জানান, হিজবুল্লাহর মূল দুই আয় উৎস হল লেবাননের সাধারণ মানুষ এবং ইরানি শাসকগোষ্ঠী। ইরানের তেল বিক্রির মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ সিরিয়া হয়ে লেবাননে পৌঁছে, যা হিজবুল্লাহর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত হয়।
সিরিয়ায় হিজবুল্লাহ নেতাকে টার্গেট
এর পাশাপাশি, সোমবার সিরিয়ায় একটি ইজরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর আর্থিক শাখার নতুন প্রধান, যিনি ইউনিট ৪৪০০-এর নেতৃত্বে ছিলেন, নিহত হন। এই ইউনিটটি মূলত ইরানি অর্থ হিজবুল্লাহর কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে। কয়েক সপ্তাহ আগে ইজরায়েলি হামলায় আরেকজন হিজবুল্লাহ নেতা মারা যান, যিনি হিজবুল্লাহর আর্থিক কার্যক্রমের দীর্ঘদিনের প্রধান ছিলেন।