তিন বছরের মধ্যে সোনার দামে সবচেয়ে বড় সাপ্তাহিক পতন ঘটে গেল। ডলারের শক্তিশালী অবস্থান এবং বিনিয়োগকারীদের পছন্দ বদলের ফলে সোনার এই দরপতন হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান।
বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম এখন দাঁড়িয়েছে ২,৫৬২.৬১ ডলার, যা ৮ শতাংশেরও বেশি কম। মার্কিন গোল্ড ফিউচার্সও সামান্য হ্রাস পেয়ে ২,৫৬৭.১০ ডলারে নেমে এসেছে। এ দিকে, দিল্লিতে প্রতি ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট সোনার দাম ১,২০০ টাকা কমে ৭৫,৮১৩ টাকায় পৌঁছেছে।
অনেকেই মনে করেন, এই পতনের একটি বড় কারণ ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্য। তিনি সুদের হার দ্রুত কমানোর সম্ভাবনা নাকচ করেছেন। এতে বিনিয়োগকারীদের ধারণা পাল্টেছে। সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ৮৩ শতাংশ থেকে কমে ৫৯ শতাংশে নেমে এসেছে।
এছাড়াও ডলারের শক্তিশালী অবস্থান সোনার জন্য আরেকটি বাধা। ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে অন্যান্য মুদ্রায় বিনিয়োগকারীদের জন্য সোনা আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। এ দিকে, মার্কিন ট্রেজারি ফলন বৃদ্ধি পাওয়ায় সোনা বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহ আরও কমে গেছে।
অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা বিক্রির পরিসংখ্যান প্রত্যাশার তুলনায় ভালো হওয়ায় অর্থনীতির স্থিতিশীলতা প্রকাশ পেয়েছে। ফলে সোনার নিরাপদ বিনিয়োগের আকর্ষণ কিছুটা কমেছে।
এদিকে, ডলার বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক সোনার দামে প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে, বিটকয়েনের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি (প্রতি কয়েন ৯৩,০০০ ডলার) অনেকের নজর সোনার থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বল্পমেয়াদে সোনার বাজারে লাভ কম হতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে সোনার দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই দরপতন সোনা কেনার জন্য একটি ভালো সুযোগ হতে পারে।
তবে বিনিয়োগের আগে সুদের হার ও মুদ্রাস্ফীতির অবস্থা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।