পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা থেকে ঋণ দেওয়া নিয়ে কড়া অবস্থান নিচ্ছে ভারত। অর্থমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বিশ্বব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার (IMF) এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (ADB)-র সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত সরকার। বৈঠকে পাকিস্তানকে দেওয়া ঋণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর পক্ষে সওয়াল করা হবে, কারণ এই অর্থের ব্যবহার নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বলে মনে করছে ভারত।
একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানায়, পাকিস্তানে ঋণের অর্থ সঠিক খাতে ব্যবহৃত হচ্ছে না, বরং তা বিভ্রান্তিকর উদ্দেশ্যে ব্যয় হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় ঋণ পুনর্বিবেচনা জরুরি।
ADB ইতিমধ্যে পাকিস্তানে ৭৬৪টি সরকারি প্রকল্পে ঋণ, অনুদান ও কারিগরি সহায়তা মিলিয়ে মোট $৪৩.৪ বিলিয়ন বরাদ্দ করেছে। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় অতিরিক্ত $৫০০ মিলিয়নের ঋণ অনুমোদন করে ADB।
অন্যদিকে, বিশ্বব্যাঙ্ক ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের সঙ্গে $২০ বিলিয়ন ঋণচুক্তি করে উন্নয়নমূলক নানা প্রকল্প যেমন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করাসহ মোট ৩৬৫টি প্রকল্পে $৪৯,৬৬৩ মিলিয়ন ঋণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া রুরাল অ্যাক্সেসিবিলিটি প্রজেক্ট, দাসু হাইড্রো প্রজেক্ট ও নানা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি।
পাকিস্তান বর্তমানে IMF-এর $৭ বিলিয়নের bailout প্রকল্পের অধীনে রয়েছে, যেখানে কর আদায় বাড়ানোর মতো কঠোর শর্ত আরোপ করেছে সংস্থাটি।
ভারতীয় কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এর আগেই জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে নতুন করে IMF ঋণ না দেওয়ার জন্য ভারতের কড়া বিরোধিতা করা উচিত। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ৯ মে অনুষ্ঠিতব্য IMF বোর্ড মিটিংয়ে ভারত এই বিষয়ে সুস্পষ্ট বিরোধিতা করবে।
এই সবকিছুর মাঝে, ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পাহলগামের কাছে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের মনোভাব আরও কঠোর হয়েছে। এরই মধ্যে ভারত ঐতিহাসিক ইন্দাস জলের চুক্তিও স্থগিত করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আন্তর্জাতিক চাপ পাকিস্তানের অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।
পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান যদি যুদ্ধ হয়, কার পাশে কোন দেশ জেনে নিন