Home ব্র্ত-উৎসব শিবরাত্রিতে ঠিক কী করলে তুষ্ট হন দেবাদিদেব?

শিবরাত্রিতে ঠিক কী করলে তুষ্ট হন দেবাদিদেব?

0

এ বছরের (২০২৩) শিবরাত্রি পড়েছে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি)।পুরাণ কথা থেকে জানা যায়, শিবঠাকুর বহু আচারে নয়, সামান্য বেলপাতায় তুষ্ট হন। আর সেই বেলপাতা যদি দেওয়া যায় মহাশিবরাত্রির পুণ্য লগ্নে তা হলে তো কথাই নেই। সঙ্গে ভক্তকে থাকতে হবে উপবাসে।

এই ভাবে না খেয়ে থেকে নিজের অজান্তেই পুণ্যের ঘড়া পূর্ণ করেছিল এক দুর্বিনীত ব্যাধ। তার সহস্র পাপ সত্ত্বেও খালি অজান্তে শিবরাত্রির ব্রত উদযাপনের ফলেই যমালয়ে না গিয়ে মৃত্যুর পর তার ঠাঁই হয়েছিল শিবলোকে।

কথিত আছে – সারা দিনের না খাওয়া, বনে বনে পশু শিকার করে ঘরে ফিরতে বেশ রাত হয়ে যায়। শেষে রাতের অন্ধকার নেমে আসায় আত্মরক্ষার স্বার্থে একটি বেলগাছের তলায় আশ্রয় নেয় ওই ব্যাধ। কিন্তু হিংস্র জন্তুর হাত থেকে বাঁচতে শেষমেশ উঠে বসে গাছের ওপর। সময়টা ছিল ফাল্গুন মাস আর চতুর্দশী তিথি। শিবরাত্রির দিন। শিশির আর হিম পড়ছে। ক্ষুধা তৃষ্ণায় ক্লান্ত ব্যাধ। এমন সময় হল কী গাছের ওপর পড়া শিশির হিম তার গা বেয়ে নেমে আসে গাছের নীচে। সেই গাছের নীচেই ছিল ভগবান শিবের একটি প্রতীকী শিলা। ব্যাধের গা চুঁইয়ে হিম শিশির এসে পড়ে সেই শিলার ওপর। ব্যাধের নড়াচড়ার চোটে গাছ থেকে একটি বেলপাতাও খসে পড়ে শিব শিলার ওপর। এতেই পুণ্যের অংশীদার হয় ব্যাধ। তার ফল পায় মৃত্যুর পর। ঠিক এমনই পুণ্য লাভের জন্য মানুষ শিবরাত্রি ব্রত পালন করে থাকে।

জানেন কি এ দিন ঠিক কী কী করলে তুষ্ট হন ভোলে বাবা?

আগের দিন নিরামিষ খেতে হয়। বিছানায় শুতে নেই। জেগেই কাটাতে হয়।

পরের দিন ভালো করে স্নান করে বিশেষ উপাচারে পুজো করতে হয় শিব শম্ভুর।

সারা দিন উপোস করে থাকতে হয়। তার পর প্রহরে প্রহরে দই দুধ ঘি মধু গঙ্গা জলের সঙ্গে শ্বেত চন্দন মিশিয়ে শিবলিঙ্গকে স্নান করাতে হয়। শিবলিঙ্গের গায়ে হলুদ-কুমকুমের প্রলেপ লাগাতে হবে। সঙ্গে বেলপাতা, আকন্দ ফুল-ফল, ধুতরাফুল, নীলকণ্ঠ ফুল ইত্যাদি দিয়ে শিবকে সাজাতে হয়। সঙ্গে দিতে হয় সিদ্ধি। এর পর ধূপ-প্রদীপ জ্বালিয়ে শিবের অর্চনা করতে হয়। মনে মনে ‘ওম নমঃ শিবায়’ মন্ত্র জপ করতে হয়।

চাইলে যজ্ঞে ঘিয়ে ভেজা ১০৮টি বেলপাতাও আহুতি দিতে পারেন। সঙ্গে জপ করতে হবে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র।

সারা রাতে চার প্রহরে চার বার একই ভাবে পুজো করে মহাদেবের প্রসাদ খেয়ে ব্রত সম্পূর্ণ করতে হয়।

হিন্দু পুরাণ অনুসারে ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে শিবরাত্রি পালন করলে রজোঃগুণ ও তমঃগুণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। মন থেকে সমস্ত রাগ, হিংসা, পাপ মুছে গিয়ে মন নির্মল ও শান্ত হয়ে যায়। সমস্ত খারাপ প্রভাবকে জয় করতে সক্ষম হয়।

শিবরাত্রির সমস্ত নিয়ম-আচার পালন করে যে ভক্তিভরে শিবের নাম (ওম নমঃ শিবায়) নেবেন, তার সারা জীবন সুখ ও শান্তিতে কাটবে।

মহা শিবরাত্রিতে একজন শিবভক্ত কালো তিলের সঙ্গে ফোটানো জলে স্নান করে নতুন বস্ত্র পরলে তা না কি শুভফল দেয়।

আরও পড়ুন: শিব শম্ভুর ১২ টি মন্দিরের পৌরাণিক কাহিনী সম্পর্কে জেনে নিন

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version