প্রতিবছর ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু জন্মজয়ন্তী উদযাপিত হয়। ২০২৫ সালে, এই দিনটি বৃহস্পতিবার পড়েছে। এই দিনটি ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবেও উদযাপিত হয়। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তাঁর সাহসিকতা এবং জাতির জন্য অবদানের প্রতি সম্মান জানাতেই এই উদ্যোগ।
সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম ১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি ওড়িশার কটকে। তাঁর পিতা জানকীনাথ বসু ও মাতা প্রভাবতী দেবী। মেধাবী ছাত্র সুভাষ কটকের রাভেনশ কলেজিয়েট স্কুল থেকে প্রথমে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন তিনি। এরপর কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে বিলেতে গিয়ে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেন সুভাষ। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করে দেশে ফিরে এসেছিলেন সুভাষ। কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের চাকরি গ্রহণ করেননি।
দেশকে পরাধীনতার অন্ধকার থেকে মুক্তি দিতে প্রাণপ্রণ লড়েছিলেন এই বঙ্গ সন্তান। তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, তা আজও সারা বিশ্বে সমান ভাবে চর্চিত। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তিনি ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ (ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি বা আইএনএ) গঠন করেছিলেন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বাহিনী নিয়ে উত্তর -পূর্ব ভারতের মণিপুর দখল করে সেখানে ভারতের পতাকা উড়িয়ে দেন।
কিন্তু আরও এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি নামে। এছাড়াও রসদের অভাবে আজাদ হিন্দ ফৌজকে হার মানতে হয়। নেতাজি গঠিত আজাদ হিন্দ সরকারের পতনের পর থেকে তাঁর আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি।তবে, তাঁর সাহসিকতা, দৃঢ়তা এবং নেতৃত্বের গুণাবলি প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে।
সুভাষচন্দ্র বসু জন্মজয়ন্তীর তাৎপর্য
সুভাষচন্দ্র বসু জন্মজয়ন্তী আমাদের জাতির জন্য তাঁর আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তাঁর সাহস এবং সাম্যের প্রতি অবিচল বিশ্বাস ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিল। এই দিনটি শুধু তাঁর সংগ্রামকেই স্মরণ করে না, পাশাপাশি দেশপ্রেম ও সাম্যের প্রতি ভারতবাসীর মনের দায়বদ্ধতাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
এই দিনটিতে দেশ জুড়ে স্কুল, কলেজ এবং বিভিন্ন সংগঠন তাঁর স্মৃতি এবং উত্তরাধিকারকে সম্মান জানাতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই দিনটি পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা রাজ্যের একটি সরকারি ছুটির দিন।