Homeকলকাতার পুজোদুর্গোৎসব ২০২৪: সমাজে আজও ‘আমরা-ওরা’, ব্রাত্যজনের কাহিনিকেই তুলে ধরছে শিবমন্দির

দুর্গোৎসব ২০২৪: সমাজে আজও ‘আমরা-ওরা’, ব্রাত্যজনের কাহিনিকেই তুলে ধরছে শিবমন্দির

প্রকাশিত

কলকাতা: মা দুর্গা যেমন দুর্গতিনাশিনী তেমনই মনমোহিনী রূপেও তিনি আমাদের কাছে ধরা দেন। অসংখ্য মানুষের উদয়াস্ত পরিশ্রমের রক্ত, ঘাম ঝরিয়ে প্রতিবছর শিল্প গড়া হয় দুর্গাপুজোয়। এই শিল্প শুধু শিল্পী, পুজোর কর্মকর্তারা আর পুজোর সঙ্গে যুক্ত কারিগররাই বানান না, বানায় ভিড় ঠেলে মণ্ডপে ঠাকুর দেখতে আসা দর্শকরাও। ধর্মীয় সব বাধা পেরিয়ে, দেশকাল নির্বিশেষে মানুষ দুর্গাপুজোয় শামিল হয় বলে ২০২১ সালে ইউনেস্কো বাংলার দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এবারও দুগ্গামায়ের আসার খবরেই আনন্দে মেতে উঠেছে আট থেকে আশি, বাঙালি, অবাঙালি নির্বিশেষে সবার মন।

পুজোর বাকি আর মাত্র কটা দিন। এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে পুজোর প্ল্যানিং। প্রতিবছরই অসাধারণ থিমের মাধ্যমে শিল্পকৃষ্টি তুলে ধরে শিবমন্দির পুজো কমিটি। ৮৮ বছরে শিবমন্দির পুজো কমিটির থিম ‘ব্রাত্য, আক্ষেপের আড়ালে’। পুজো কমিটির কর্তা পার্থ ঘোষ জানান, “এবার আমাদের থিম, ব্রাত্য। নামগোত্রহীন মানুষের কথাই তুলে ধরব আমরা। সৃজনের দায়িত্বে রয়েছেন পূর্ণেন্দু দে, অরূপ কর, প্রেমেন্দুবিকাশ চাকী, সুশান্ত হালদার, জয় সরকার আর দেবদূত ঘোষঠাকুর।”

হঠাৎ এমন বিষয়কে থিম হিসাবে বেছে নেওয়া হল কেন? পার্থবাবু বলেন, “সাজানোগোছানো ছোট্ট বাড়ি হোক কিংবা সুউচ্চ বহুতল, শান্তির নীড় তৈরি করা আমাদের প্রত্যেকেরই স্বপ্ন থাকে। বাড়িঘর, সে বহুতলই হোক কিংবা ধর্মীয় স্থান বা জীবনকে উপভোগ করার কেন্দ্র বিনোদন পার্ক কিংবা প্রেক্ষাগৃহ – এসব নির্মাণকাজে আমাদের অবদান কতটুকু? অর্থের জোগান আর স্থাপত্যের নকশা ছাড়া আর কী অবদান আছে আমাদের? এই নির্মাণকাজের প্রকৃত রূপকার যারা সেই সব রাজমিস্ত্রি, রঙের মিস্ত্রি, কাঠের মিস্ত্রি, শ্রমিক, মজুর, এরা প্রত্যেকেই সমাজের আরেক প্রান্ত থেকে আসা মানুষ। নিম্নবিত্ত গ্রাম থেকে আসা এসব মানুষ শহরে আসে কাজের সন্ধানে। কোনোমতে শহরে এসে একচিলতে ঘরে অনেকে মিলে মাথা গুঁজে থাকে। শহুরে জীবনে ব্রাত্য এসব অবহেলিত কোনো রকমে দিন গুজরান করা মানুষ কিন্তু দিনের শেষে সারাদিনের ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের পর ফিরতে পারে না প্রিয়জনের কাছে। তাঁদের দক্ষ হাতে রূপ পায় শহরের বুকে আমাদের স্বপ্নের আশিয়ানা।

তৈরি হচ্ছে শিবমন্দির-এর মণ্ডপ। ছবি: রাজীব বসু।

পার্থবাবুর কথায়, “সামনেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। দুর্গাপুজোতেও এসব প্রান্তিক মানুষ ছাড়া আমরা অসহায়। ঢাকি, শোলাশিল্পী, অস্ত্রশিল্পী, ফুলওয়ালা-ফুলওয়ালি, প্রতিমাশিল্পীর মতো সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির তথাকথিত অবহেলিত মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে পুজো সম্পন্ন হয়। মায়ের কেশ তৈরি করেন ভিন ধর্মের মানুষ। সমাজের এসব নিম্নবর্গের মানুষ বংশপরম্পরায় এসব কাজ করে থাকেন। এ ছাড়াও শাস্ত্রমতে প্রতিমা গড়ার সময় মাটি সংগ্রহ করা হয় পতিতালয় থেকে।”

পার্থবাবুর প্রশ্ন, “এসব পুজোর রূপকারদের রক্ত জল করা পরিশ্রম ছাড়া দুর্গোৎসব অসম্পূর্ণ কিন্তু আমরা এসব মানুষকে কতটুকু সম্মান দিই? সমাজে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার কতটুকু চেষ্টা করি? আমাদের পাশে থেকে পুজো উপভোগ করার সুযোগ থাকে না এসব অবহেলিত ব্রাত্য মানুষের। তাই এসব অবহেলিত মানুষের কথা তুলে ধরা হবে এবার শিবমন্দিরের পুজোয়।”

কোথায় এই পুজো

দক্ষিণ কলকাতায় সাদার্ন অ্যাভেনিউ ধরে এগিয়ে আসুন। শরৎ বোস রোডের মোড় ছাড়িয়ে আরও এগিয়ে গেলে বাঁদিকে পড়বে লেক টেম্পল রোড। সেই লেক টেম্পল রোড ধরে খানিকটা এগিয়ে গেলেই বাঁদিকে পড়বে শিবমন্দির-এর পুজো।   

আরও পড়ুন

দুর্গোৎসব ২০২৪: বনেদি বাড়ি থেকে সর্বজনীন পুজো কিংবা গঙ্গাপাড়ের হুগলি, সঙ্গী হোন পর্যটন দফতরের পুজো পরিক্রমায়  

আপনার প্রশ্ন, আমাদের উত্তর

সাম্প্রতিকতম

গঙ্গার তীরে বিলাসের নতুন ঠিকানা, রায়চকে আনুষ্ঠানিক ভাবে চুল হল ‘তাজ গঙ্গা কুটির রিসর্ট অ্যান্ড স্পা’

রায়চকে গঙ্গার তীরে খুলল ‘তাজ গঙ্গা কুটির রিসর্ট অ্যান্ড স্পা’। আইএইচসিএল-এর নতুন এই বিলাসবহুল রিসর্ট রাজ্যের পর্যটনে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।

আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে ডার্বি ম্যাচের আগে অনুষ্ঠিত হল শিল্ড কার্নিভাল

ডার্বির আগে ঐতিহ্যমণ্ডিত আইএফএ শিল্ডের কার্নিভাল মাতাল কলকাতা। মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন তারকাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হল টক শো ও কুইজ প্রতিযোগিতা, বিজয়ীদের হাতে ফাইনালের টিকিট।

টোটো নিবন্ধনের পর মিলবে সরকারি ড্রাইভিং লাইসেন্স, উদ্যোগী পরিবহণ দফতর

রাজ্যের সব টোটো এখন সরকারি নথিভুক্তির আওতায় আসছে। পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হলে টোটো চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর সমালোচনার জবাবও দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।

আলোর উৎসবের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শহর, কালীপুজোর আগে শেষ টান শিল্পীদের তুলিতে

আর মাত্র দিন তিনেক বাকি কালীপুজো ও দীপাবলির। আলোর উৎসবের আগে ব্যস্ত শহর কলকাতা— কোথাও কালীমূর্তিতে তুলির শেষ টান, কোথাও দীপাবলির লাড্ডু তৈরির তোরজোড়। ক্যামেরাবন্দি করলেন চিত্র সাংবাদিক রাজীব বসু।

আরও পড়ুন

কলকাতা দুর্গাপূজা কার্নিভাল ২০২৫: নৃত্য-সংগীত সহযোগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

কলকাতা: শুরু হয়েছিল ২০১৬-তে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে। মাঝে এক বছর বাদ ছিল...

মহানগরীতে দশমী: দেবীবরণ, সিঁদুরখেলা, প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে শেষ হল এ বছরের শারদোৎসব

খবর অনলাইন ডেস্ক: দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল পুজো। মোটামুটি নির্বিঘ্নেই সমাপ্তি ঘটল এ...

কবে পড়ছে ষষ্ঠী থেকে দশমী? জেনে নিন ২০২৬ সালের দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট

প্রকাশিত হল ২০২৬ সালের দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট। মহালয়া ১০ অক্টোবর, ষষ্ঠী ১৭ অক্টোবর, বিজয়া দশমী ২১ অক্টোবর। অপেক্ষায় বাঙালি।