দেবীপক্ষ শুরু হয়ে গিয়েছে আজ তিন দিন হল। পুণ্যার্থীদের ভিড় বাড়ছে সেই মন্দিরে। শুধু স্থানীয় মানুষজনই নন, প্রতিবেশী রাজ্য থেকেও ভক্তরা আসছেন। নবরাত্রির মাত্র ৯টি দিন তো খোলা থাকবে এই মন্দির। তারপর তো বছরের বাকি দিনগুলোয় বন্ধ। এবার দর্শন না হলে আবার এক বছরের অপেক্ষা। বছরে মাত্র ৯ দিন খোলা? খুব অবাক হওয়ার ব্যাপার না? কোথায় এই মন্দির?
মন্দিরের দেশ ভারত। নানান প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানান প্রাচীন সব মন্দির। কত জনপদ গড়ে উঠেছে সে সব মন্দিরকে ঘিরে। ইতিহাস আজও কথা বলে সে সব প্রাচীন মন্দিরে। পড়শি রাজ্য ওড়িশায় রয়েছে সেই দুর্গামন্দির যার দরজা শুধু খোলে আশ্বিন মাসে দুর্গাপূজার সময়ে। নবরাত্রিতে ওই মন্দির খোলে। বছরের বাকি দিনগুলোয় বন্ধ থাকে সেই মন্দির।
ওড়িশার গজপতি জেলায় পারালাখেমুন্ডি এক প্রাচীন জনপদ। জায়গাটি অন্ধ্রপ্রদেশ লাগোয়া। ওড়িশায় সবচেয়ে পুরোনো পুরসভা। ১৮৮৫ সালে এই পুরসভা গড়ে ওঠে। এই শহরের বাসিন্দারা ওড়িয়ার পাশাপাশি তেলুগুতেও কথা বলেন। এই পারালাখেমুন্ডির দোলাবান্ধা এলাকায় রয়েছে সেই প্রাচীন মন্দির। নবরাত্রির সময় মাত্র ৯টি দিন খোলা থাকে এই মন্দিরের দরজা। এই মন্দির কত প্রাচীন, মন্দির খোলার এই প্রথা কবে থেকে চালু হল, সেসব সম্পর্কে ইতিহাস নীরব।
এই মন্দিরে রয়েছেন মা দুর্গা। মা দুর্গার যে বিগ্রহ এই মন্দিরে রয়েছে তাঁকে ওড়িয়া ভাষায় বলে দান্দু মা। তেলুগু ভাষায় ওই বিগ্রহের নাম দণ্ডমারাম্মা। নবরাত্রির সময় ওড়িশা তো বটেই অন্ধ্রপ্রদেশ থেকেও পুণ্যার্থীরা দেবী দর্শন করতে আসেন। প্রচুর ভিড় হয়।
ওড়িয়া ক্যালেন্ডারের আশ্বিন মাসে নবরাত্রির প্রথম দিনে যাগযজ্ঞ করে মন্দিরের দরজা খোলা হয়। দরজা বন্ধ হয়ে যায় দশমীপূজা সাঙ্গ করে। বছরের বাকি দিনগুলোয় এই মন্দিরে আর কোনো পুজো হয় না।
মন্দিরের দরজা বন্ধ করার আগে মাটির পাত্রে আস্ত নারকেল দেবীকে নিবেদন করা হয়। পরের বছর যখন মন্দিরের দরজা খোলে তখন দেখা যায় নারকেল আস্তই রয়েছে। খারাপ হয়নি। সেই নারকেল ভেঙে পুণ্যার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।