Home শিক্ষা ও কেরিয়ার নিফটি ও সেনসেক্সে বড় ধস, ভারতীয় শেয়ারবাজারের এই অস্থিরতা আর কতদিন

নিফটি ও সেনসেক্সে বড় ধস, ভারতীয় শেয়ারবাজারের এই অস্থিরতা আর কতদিন

0

শুক্রবার ভারতীয় শেয়ারবাজারে বিক্রির চাপ আরও তীব্র। নিফটি ফিফটি সূচক ২২,৪৩৩ পয়েন্টে নেমে খুলেছিল, দিনের শেষে ২২,১১৭ পয়েন্টে বন্ধ হয়। দিনের সর্বনিম্ন ২২,১০৪ স্পর্শ করে সূচকটি ৪২৫ পয়েন্টের ক্ষতি করে। বিএসই সেনসেক্স ৭৪,২০১ পয়েন্টে নেমে খুলে দিন শুরু করেছিল। সেখান থেকে ৭৩,১৯২ পয়েন্টে বন্ধ হয়, যেখানে দিনের সর্বনিম্ন ৭৩,১৪১ পয়েন্ট ছিল। সকালেই সেনসেক্স ১,৪০০ পয়েন্টের পতন দেখে। ব্যাংক নিফটি সূচকও ৪৮,৪৩৭ পয়েন্টে খুলে ৪৮,২৬২ পয়েন্টে বন্ধ হয়, যেখানে দিনের সর্বনিম্ন ছিল ৪৮,০৭৮ পয়েন্ট। আজ সমস্ত ক্ষেত্রেই লাল সংকেত দেখা গেছে, বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি, প্রযুক্তি, অটোমোবাইল ও টেলিকম খাতে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা লেগেছে।

আজকের বিক্রির চাপ কেবল প্রধান সূচকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বিস্তৃত বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। বিএসই স্মল-ক্যাপ সূচক প্রায় ২.৩৫ শতাংশ এবং মিড-ক্যাপ সূচক প্রায় ২ শতাংশ পতন দেখেছে। পতঞ্জলি ফুডস, গ্রানিউলস ইন্ডিয়া, আদিত্য বিড়লা রিয়েল এস্টেট, দীপক ফার্টিলাইজার্স এবং রেডিংটন ছিল আজকের প্রধান পতনকারী শেয়ারগুলির মধ্যে। তবে, বাজার পতনের মাঝেও কেইআই ইন্ডাস্ট্রিজ, স্টার হেলথ অ্যান্ড অ্যালাইড ইনস্যুরেন্স, পলিক্যাব ইন্ডিয়া, আইইএক্স, আরআর কেবল ও কোল ইন্ডিয়ার শেয়ারে শক্তিশালী কেনাকাটা দেখা গেছে।

শুক্রবারের লেনদেন শেষে বিএসই-তালিকাভুক্ত ১০৬টি শেয়ার উচ্চতর সীমা (upper circuit) স্পর্শ করেছে, যখন ৪৭১টি শেয়ার নিম্নতর সীমায় (lower circuit) ছিল। একইভাবে, ৫১টি শেয়ার ৫২-সপ্তাহের উচ্চতা স্পর্শ করেছে, আর ৯০৮টি শেয়ার ৫২-সপ্তাহের নিম্নে পৌঁছেছে।

কেন ভারতীয় শেয়ারবাজারে পতন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, নিম্নলিখিত পাঁচটি মূল কারণ আজকের বাজার পতনের জন্য দায়ী:

১) ভারতীয় ব্যাংকের দুর্বল আয়ের গুজব: বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, চতুর্থ ত্রৈমাসিক (Q4) আয়ে ভারতীয় ব্যাংকগুলোর ফলাফল বাজারের প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল হতে পারে বলে গুজব রয়েছে। তৃতীয় ত্রৈমাসিকের (Q3FY25) ফলাফল হতাশাজনক হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা অতিরিক্ত চাপ অনুভব করছেন।

২) ডিআইআই উচ্চ স্তরে আটকে থাকা: এফআইআই (FIIs) বা বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ধারাবাহিকভাবে বিক্রি করছে, কিন্তু দেশীয় প্রতিষ্ঠানগত বিনিয়োগকারীরা (DIIs) আগের মতো সক্রিয় হচ্ছে না। উচ্চ মূল্যে আটকে থাকায় ডিআইআইরা নতুন বিনিয়োগ করতে সতর্ক রয়েছে।

৩) এমএসসিআই পুনর্গঠন: আসন্ন এমএসসিআই (MSCI) সূচক পুনর্গঠন (rejig) উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিনিয়োগকারীদের। বিদেশি ও দেশীয় বিনিয়োগকারীরা তাঁদের বিনিয়োগ পুনর্বিন্যাসের পরিকল্পনা করছে।

৪) মার্কিন বন্ডের বৃদ্ধি: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ডের মুনাফা বাড়ছে, যার ফলে এফআইআইগুলি ভারতীয় বাজারে বিনিয়োগ তুলে নিয়ে মার্কিন বন্ড মার্কেটে বিনিয়োগ করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বাজারে নতুন শুল্ক নীতির সম্ভাবনা আরও বাড়ায় এফআইআইদের বিক্রি চলতেই পারে।

৫) ভারত থেকে চিনে এফআইআই বিনিয়োগ স্থানান্তর: ট্রাম্পের নির্বাচনী জয়ের পর মার্কিন বাজারে বিশাল মূলধন প্রবাহিত হয়েছে। পাশাপাশি, চিনের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের আশা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিনে বিনিয়োগ বাড়ছে। কম দামে চিনের স্টক পাওয়া যাচ্ছে, তাই এফআইআইদের মধ্যে ‘ভারতে বিক্রি, চিনে কেনো’ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় বাজারে এই অস্থিরতা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version