রাজ্যে প্রাথমিক টেট (Teacher Eligibility Test) পরীক্ষা এ বছর হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে বেনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে আছে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ২০২২-এর পর থেকে টেট পরীক্ষার নিয়মিত আয়োজন করার প্রতিশ্রুতি দেয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু ২০২৪ সালে সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারল না পর্ষদ। পর্ষদ জানিয়েছে, চলতি বছরে আর কোনও টেট পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, কারণ ২০২২ ও ২০২৩ সালের পরীক্ষাগুলির নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেছেন, “আমরা আগে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাই, তারপর আবার পরীক্ষা নেব।” যদিও ২০২৩ সালে দ্বিগুণ নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও, কোনও নিয়োগই হয়নি। এতে পরীক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের হতাশা বেড়েছে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রায় দেড় লক্ষ প্রার্থী এখনও চাকরি পাননি।
এ বিষয়ে সিপিএম সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য কড়া সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, “রাজ্যের নিয়োগ প্রক্রিয়া দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে আছে। আদালতের হস্তক্ষেপ ছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো স্বচ্ছতা আসছে না।” বিকাশ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, টেট পরীক্ষা না হওয়ার ফলে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত যুবকদের বেকারত্ব বাড়ছে, এবং অন্য রাজ্যে আবেদন করার সুযোগও তাঁদের কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদারও সমালোচনা করেছেন এই প্রসঙ্গে। তিনি বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনকালে পরীক্ষার বাতিল এবং চাকরির বাতিল এখন ভবিতব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। গরিবের সন্তানদের জন্য কোনো ভবিষ্যৎ রাখা হয়নি।”
এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখার জন্য পর্ষদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে চাকরিদের মধ্যে নতুন করে ক্ষোভ তৈরি হবে।